এশিয়ার স্পট মার্কেটে স্থিতিশীল এলএনজির দাম

এশিয়ার স্পট মার্কেটে টানা তিন সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখিতার পর চলতি সপ্তাহে স্থিতিশীল ছিল তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম। এশিয়ার স্পট মার্কেটে টানা তিন সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখিতার পর চলতি সপ্তাহে স্থিতিশীল ছিল তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম। এ স্থিতিশীলতার পেছনে ভূমিকা রেখেছে এশিয়ার ক্রেতা দেশগুলোর নিম্নমুখী চাহিদা ও ইউরোপে সরবরাহ বৃদ্ধি।
শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় জুলাইয়ে সরবরাহের জন্য চলতি সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় দাম ছিল ১২ ডলার ৪০ সেন্ট। আগের সপ্তাহেও একই দামে জ্বালানি পণ্যটি বেচাকেনা হয়েছে। এ বিষয়ে আর্গাসের হেড অব এলএনজি প্রাইসিং মার্টিন সিনিয়র জানান, মালয়েশিয়ার বিন্টুলু রফতানি টার্মিনালে রক্ষণাবেক্ষণজনিত কারণে উৎপাদন কমেছে। তবে পণ্যটির দাম এখনো এশিয়ার মূল্য সংবেদনশীল ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এ কারণে চাহিদাও খুব সীমিত।
রিস্ট্যাড এনার্জির সিনিয়র অ্যানালিস্ট মাসানোরি ওদাকা বলেন, ‘বর্তমানে শুধু বড় ট্রেডিং হাউজ ও পোর্টফোলিও কোম্পানিগুলোর কাছ থেকেই এলএনজি ক্রয়ের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। যদি প্রতি এমএমবিটিইউয়ে দাম আরো ১ ডলার কমে যায় তাহলে কিছু এশীয় ক্রেতা দেশে এলএনজির চাহিদা বাড়তে পারে।’ তিনি জানান, সম্পূর্ণ পরিবহন ব্যয় হিসাব করলে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এশিয়ায় লাভজনক রফতানির সুযোগ বন্ধ থাকলেও নাইজেরিয়া থেকে এশিয়ায় সরবরাহের পথ খোলা রয়েছে।
এদিকে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস গত বৃহস্পতিবার জুলাইয়ের সরবরাহ চুক্তিতে নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার আদর্শে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম স্থির করেছে প্রায় ১১ ডলার ২১ সেন্টে। একই মাসের সরবরাহ চুক্তিতে টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে ৫২ সেন্ট ছাড় দেয়া হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যাপ্ত এলএনজি কার্গো ও পাইপলাইনে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপের বাজারে এলএনজির বাজারে চাপ তৈরি হয়েছে।
আরগাস প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্যনির্ধারণ করেছে ১১ ডলার ৩০ সেন্ট। অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিজ জুনে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১১ ডলার ১৮ সেন্ট। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস ও আটলান্টিক এলএনজির ব্যবস্থাপক অ্যালি ব্লেকওয়ে বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানির সরবরাহ বৃদ্ধি ও নরওয়ে থেকে ইউরোপে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস প্রবাহ পুনরুদ্ধার ইউরোপের বর্তমান চাহিদা পূরণ করছে।’
এ বিষয়ে স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানান, কেপ অব গুড হোপ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় এলএনজি রফতানির লাভজনক সুযোগ কমে গেছে। এছাড়া পানামা খাল হয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এশিয়ায় এলএনজি রফতানির পথও তিন সপ্তাহ পর বন্ধ হয়েছে। এ কারণে ইউরোপের দেশগুলোয় সরবরাহ বেড়েছে। কাসিম আফগান আরো জানান, আটলান্টিক মহাসাগরীয় পথে এলএনজি পরিবহন ব্যয় টানা চতুর্থ সপ্তাহের মতো কমেছে। শুক্রবার তা নির্ধারণ করা হয়েছে দৈনিক ২৯ হাজার ৫০০ ডলারে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে এলএনজি পরিবহন ব্যয় কমে দৈনিক ২০ হাজার ৭৫০ ডলারে স্থিতিশীল আছে।
খবর বিজনেস রেকর্ডার।