যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং কেড়ে নিল মুডিজ – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং কেড়ে নিল মুডিজ

  • ১৭/০৫/২০২৫

মুডিজ এক বিবৃতিতে জানায়, পরপর বেশ কয়েকবার বড় ধরনের বাজেট ঘাটতি ও ঋণের সুদের হার বাড়লেও তা ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন প্রশাসন ও কংগ্রেস। তিনটি প্রধান রেটিং সংস্থার মধ্যে মুডিজ সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের রেটিং কমাল। স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস ২০১১ সালে এবং ফিচ রেটিংস ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রেটিং কমিয়েছিল। ঋণ সংকট মোকাবেলায় ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বিশ্ববিখ্যাত ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ রেটিংস যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বোচ্চ ট্রিপল এ (Aaa) ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে ডাবল এ ওয়ান (Aa1) করেছে। শুক্রবারের (১৬ মে) এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব বাজারে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর ছাড় পরিকল্পনাও জটিলতায় পড়তে পারে। খবর রয়টার্স।
মুডিজ এক বিবৃতিতে জানায়, পরপর বেশ কয়েকবার বড় ধরনের বাজেট ঘাটতি ও ঋণের সুদের হার বাড়লেও তা ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন প্রশাসন ও কংগ্রেস। তবে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মূল অর্থনৈতিক শক্তিও স্বীকার করেছে—বিশাল ও স্থিতিশীল অর্থনীতি, উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে মার্কিন ডলারের আধিপত্য এখনো দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তিনটি প্রধান রেটিং সংস্থার মধ্যে মুডিজ সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের রেটিং কমাল। স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস ২০১১ সালে এবং ফিচ রেটিংস ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রেটিং কমিয়েছিল। মুডিজ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৪ সালে বাজেট ঘাটতি যেখানে জিডিপির ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, তা ২০৩৫ সাল নাগাদ বেড়ে প্রায় ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এর প্রধান কারণ—ঋণের ওপর সুদের খরচ বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ব্যয় ও তুলনামূলক কম রাজস্ব আদায়।
বিশেষভাবে ট্রাম্পের ২০১৭ সালের করছাড় অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা আগামী এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক ঘাটতিতে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবে বলেও সতর্ক করেছে মুডিজ। মুডিজের এই পদক্ষেপকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চেং। তিনি মুডিজের প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডিকে ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তার বিশ্লেষণ কেউ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না। বারবার ভুল প্রমাণিত হয়েছেন তিনি।‘
ট্রাম্পের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের অর্থনীতিবিদ স্টিফেন মুর এই রেটিং কমানোকে ‘হঠকারি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বন্ড যদি ট্রিপল-এ না হয়, তবে আর কী হতে পারে?’
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য জানায়নি। বর্তমান বাজেট সংকটের পেছনে রাজনৈতিক অচলাবস্থাও একটি বড় কারণ। রিপাবলিকানরা কর বাড়াতে রাজি নন, আবার ডেমোক্র্যাটরা খরচ কমাতে অনিচ্ছুক। শুক্রবার, হাউস রিপাবলিকানরা এক বড় করছাড় ও ব্যয় কমানোর বিল পাস করাতে ব্যর্থ হয়। কয়েকজন কট্টরপন্থী রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা বিলে ট্রাম্প প্রশাসনের মেডিকেইড ও পরিবেশবান্ধব ট্যাক্স সুবিধা কাটার দাবি জানিয়ে বিরোধিতা করেন। ডেমোক্র্যাটরাও তাদের সঙ্গে একমত হন। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকে বাজেট ভারসাম্য আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বারবার বলেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নের খরচ কমাতে চায়। কিন্তু ব্যয় কমাতে ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বিভাগ আশানুরূপ ফল দিতে পারেনি।
ট্যারিফ বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়াতে গিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কাও বাড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
এদিকে, রেটিং কমার পর মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার বেড়ে গেছে। বাজার বন্ধ থাকাকালে সিদ্ধান্ত এলেও সোমবার শেয়ারবাজার খোলার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us