ট্রাম্পকে কাতারের বিমান উপহার, সমালোচক-সমর্থক একসঙ্গে ক্ষুব্ধ – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০২:৫১ অপরাহ্ন

ট্রাম্পকে কাতারের বিমান উপহার, সমালোচক-সমর্থক একসঙ্গে ক্ষুব্ধ

  • ১৫/০৫/২০২৫

নিউইয়র্ক পোস্টের মতো ট্রাম্পপন্থী সংবাদপত্রও সম্পাদকীয়তে বলেছে—এই উপহার মোটেও নিঃস্বার্থ নয়। ট্রাম্পের এটি গ্রহণ করা উচিত হয়নি।
সমালোচকরা বলছেন, এই উপহার ভবিষ্যতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে কাতারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হতে পারে। রিপাবলিকান সেনেটর র‍্যান্ড পল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের বড় উপহারের কারণে কাতারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে বিলাসবহুল একটি বিমান গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করায় আমেরিকার রাজনৈতিক বিভক্তির দুই প্রান্তের মানুষ বিরলভাবে একত্র হয়েছেন—তবে ট্রাম্পের বিপক্ষে। খবর বিবিসি।
ট্রাম্পের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকা বহু মানুষই প্রশ্ন তুলেছেন, প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান উপহার হিসেবে গ্রহণ করা কতটা গ্রহণযোগ্য। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও বিমানটি ভবিষ্যতে ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরির অংশ হতে পারে বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।
রক্ষণশীল ম্যাগা ঘরানার অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি এটিকে ‘ঘুষ’, ‘দুর্নীতি’ কিংবা ‘ট্রোজান হর্স’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ফক্স নিউজ উপস্থাপক মার্ক লেভিন কাতারকে ‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র’ বলেও উল্লেখ করেছেন। এমনকি নিউইয়র্ক পোস্টের মতো ট্রাম্পপন্থী সংবাদপত্রও সম্পাদকীয়তে বলেছে—এই উপহার মোটেও নিঃস্বার্থ নয়। ট্রাম্পের এটি গ্রহণ করা উচিত হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট দাবি করেছেন, উপহার গ্রহণের প্রক্রিয়াটি আইনি ও স্বচ্ছভাবে হয়েছে। অন্যদিকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এটি দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি জিটুজি বা সরকার থেকে সরকারের লেনদেন এবং ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক এতে জড়িত নয়। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই উপহার ভবিষ্যতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে কাতারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হতে পারে। রিপাবলিকান সেনেটর র‍্যান্ড পল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের বড় উপহারের কারণে কাতারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে সিনেটর টেড ক্রুজ এটিকে নিরাপত্তা ও নজরদারি ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
রিপাবলিকান কৌশলবিদ ডাগ হাই বলেছেন, ‘এই উপহারকে কোনো সরল চুক্তি ভাবা হবে বোকামি। কাতার বুঝে গেছে—ট্রাম্পকে প্রশংসা করলে, উপহার দিলে, তারা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে পারে।‘ ট্রাম্পপন্থী ইনফ্লুয়েন্সার লরা লুমার বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে এখনো সমর্থন করি, কিন্তু এই চুক্তি একটি কলংক। এই উপহার হলো ট্রোজান হর্সের মতো—বাইরে বিমান, ভেতরে বিপদ।‘
রক্ষণশীল রাজনৈতিক ভাষ্যকার বেন শাপিরোর মতে— ‘এই চুক্তির প্রযুক্তিগত নাম হতে পারে ‘স্লিমি’। কাতার এমনিতে মিষ্টি হৃদয়ের দেশ নয় যে তারা এমন বিলাসবহুল উপহার বিনা স্বার্থে দেবে। তারা সব পক্ষের পকেটে টাকা ঢোকানোর চেষ্টা করে।‘
অন্যদিকে, সিনেটর টমি টিউবারভিল বলেন, ‘বিনামূল্যের জিনিস ভালো। এখন তো আমাদের তেমন টাকাও নেই।‘ ট্রাম্প নিজেও ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, ‘বিমানটি আমাকে নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীকে দেয়া হচ্ছে। কেবল একজন বোকাই এটি গ্রহণ না করার কথা ভাববে।‘ তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় দীর্ঘমেয়াদে বড় প্রভাব ফেলবে না। কারণ অতীতেও নানা বিতর্ক ট্রাম্পকে রাজনৈতিকভাবে তেমন ক্ষতি করতে পারেনি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us