যুক্তরাষ্ট্র-চীন পাল্টাপাল্টি শুল্ক কমাল ১১৫ শতাংশ – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র-চীন পাল্টাপাল্টি শুল্ক কমাল ১১৫ শতাংশ

  • ১৩/০৫/২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের পণ্যে আরোপ করা শুল্ক সাময়িক সময়ের জন্য কমাতে রাজি হয়েছে। এ পদক্ষেপ আগামী ৯০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। জেনেভায় দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তার বৈঠকের পর গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে। এ পদক্ষেপ বাণিজ্য উত্তেজনা কমানোর পাশাপাশি বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতিকে নিজেদের মধ্যকার বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে তিন মাস সময়ও দেবে, বলছে ব্লুমবার্গ নিউজ।
সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যখন আলোচনা শুরু করছিলেন, তখনও চীনা আমদানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পণ্যে চীনের ১২৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। দুই দিনের আলোচনায় তারা ১৪ মে থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য ওই পাল্টাপাল্টি শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমাতে রাজি হয়েছে বলে সোমবার উভয় দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
এর ফলে বেশিরভাগ চীনা পণ্যে দেয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়াবে ৩০ শতাংশে, মার্কিন পণ্যে চীনের শুল্ক হবে মাত্র ১০ শতাংশ। দুই দেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে একটি প্রক্রিয়া দাঁড় করানোর ব্যাপারেও একমত হয়েছে বলে বলা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। দুই দেশ এর আগে দুদিনের বাণিজ্য আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হওয়ার কথা জানিয়েছিল। এ খবর পেয়েই চীন ও হংকংয়ের শেয়ারবাজারে চাঙা ভাব দেখা গেছে। ডলার ও ইউয়ানের কদরও বেড়েছে। মার্কিন বাণিজ্য দূত জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে আরও ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য চায়।
হোয়াইট হাউস রোববারই এক বিবৃতিতে দুই দেশের মধ্যে একটি ‘বাণিজ্য চুক্তি’ হয়েছিল বলে জানালেও এ সম্বন্ধে বিস্তারিত কিছু বলেনি। ব্লুমবার্গ লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের নতুন ‘চুক্তি’ নিয়ে বাজার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখালেও আগের অভিজ্ঞতা বলছে, দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত চুক্তি হতে অনেক সময় লাগতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত তেমন কোনো চুক্তির পথে আদৌ যাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
২০১৮ সালেও একবার বাণিজ্য আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজেদের মধ্যকার বিরোধ ‘স্থগিত’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র পরে সেই সমঝোতা থেকে সরে আসে। এরপর দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বাড়তি শুল্ক আরোপ আর আলোচনার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ‘ফেজ ওয়ান’ বা ‘প্রথম ধাপের’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু চীন পণ্যের ক্রয়সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, উল্টো কোভিড মহামারির সময় দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি আরও বেড়ে যায়, যা বর্তমান বাণিজ্য বিরোধের পথ তৈরি করে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটিই ছিল চীনা ও মার্কিন কর্মকর্তাদের প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। ক্ষমতায় এসেই বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপের ঝড় বইয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চীনা পণ্যের ওপর দফায় দফায় শুল্ক বৃদ্ধি করতে করতে সেটা ১৪৫ এমনকি স্বল্প সময়ের জন্য ২০০ শতাংশও ছাড়িয়ে যান ট্রাম্প।
এর প্রতিক্রিয়ায় বেইজিংয়ের দিক থেকেও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দরকারি দুর্লভ খনিজ রপ্তানি বন্ধ এবং মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করে তারা বুঝিয়ে দেয় চীনও ছেড়ে কথা কইবে না। তবে দুদেশের সমঝোতার মাধ্যমে সাময়িকভাবে বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান হলো। তাদের এই ঘোষণার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্থিতিশীল আর্থিক বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলটা আসতে শুরু করেছে।
সূত্র : ব্লুমবার্গ

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us