ভারত-পাকিস্তান ৮৭ ঘণ্টার সংঘর্ষ: কার কত আর্থিক ক্ষতি? – The Finance BD
 ঢাকা     রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

ভারত-পাকিস্তান ৮৭ ঘণ্টার সংঘর্ষ: কার কত আর্থিক ক্ষতি?

  • ১২/০৫/২০২৫

৮৭ ঘণ্টার এই সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল শেয়ারবাজারে, বিমানে, বিনিয়োগে, এবং জনগণের মানসিক শান্তিতে। প্রতি ঘণ্টায় এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতির এই সংঘাত দেখিয়ে দিয়েছে, আধুনিক যুগে যুদ্ধের প্রকৃত খরচ শুধু গোলাবারুদে সীমাবদ্ধ নয়—বরং তার ব্যাপ্তি অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আস্থা এবং সমাজজীবনের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। ৭ মে রাত ১টা ৫ মিনিটে ভারতীয় বিমান বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি আকস্মিক সামরিক অভিযান শুরু করে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নয়টি বেসামরিক স্থানে ২৩ মিনিটব্যাপী এই আক্রমণে ব্যবহৃত হয় ভারতের অন্যতম শক্তিশালী যুদ্ধবিমান, ফরাসি নির্মিত ডাসল্ট রাফায়েল। এসব যুদ্ধবিমান সজ্জিত ছিল দূরপাল্লার স্ক্যাল্প ইজি ক্রুজ মিসাইল ও নির্ভুল আঘাতকারী এএএসএম হ্যামার গাইডেড বোমা দিয়ে। এই আক্রমণের পাশাপাশি ভারত মোতায়েন করে মনুষ্যবিহীন বিমান ব্যবস্থা—ইসরায়েলি প্রযুক্তির হারোপ এবং স্কাইস্ট্র্যাইকার ড্রোন। যা শুধু হামলা চালায়নি, বরং পাকিস্তানের রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার দুর্বলতা খুঁজে বের করেছে।
ভারতের এই পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তান শুরু করে ব্যাপক প্রতিরোধমূলক অভিযান। পাকিস্তান বিমান বাহিনী জে-১০সি মাল্টিরোল ফাইটার ব্যবহার করে, যা পিএল-১৫ দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত ছিল। এই অভিযানে কোরাল ইলেকট্রনিক কাউন্টারমেজার ব্যবস্থাও ব্যবহৃত হয়, যার মাধ্যমে পাকিস্তান ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সক্ষমতা প্রদর্শন করে।
৭ মে রাত ১টা ৫ থেকে ১টা ৩০-এর মধ্যে, পাকিস্তান বিমান বাহিনী তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করে। যদি তাদের দাবি সত্য হয় তবে এটাই ছিল রাফালের প্রথম নিশ্চিত যুদ্ধক্ষতি। পাকিস্তান আরো দাবি করে, তারা ইলেকট্রনিক প্রতিরক্ষা, ক্ষুদ্র পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমানবিধ্বংসী অস্ত্রের সাহায্যে ভারতীয় বাহিনীর ১২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে।
এই সংঘাত কেবল যুদ্ধের ময়দানে সীমাবদ্ধ ছিল না—এর প্রভাব বিস্তার করে দুই দেশের অর্থনীতি ও সমাজজীবনে। ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত, ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিট ধরে ভারত ও পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে দেখা দেয় মারাত্মক পতন। ভারতের নিফটি ৫০ ও বিএসই সেনসেক্স থেকে হারিয়ে যায় প্রায় ৮ হাজার ২০০ কোটি ডলার। উত্তর ভারতের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে প্রতিদিন গড়ে ৮০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ স্থগিত হওয়ায় রাজস্ব হারায় আরো ৫ কোটি ডলার।
সামরিক অভিযানের সরাসরি খরচ ছিল আনুমানিক ১০ কোটি ডলার। ধ্বংসপ্রাপ্ত যুদ্ধবিমানসহ অন্যান্য হারানো সম্পদের ক্ষতি যোগ করলে এই খাতেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪০ কোটি ডলার। এছাড়া সরবরাহ ব্যবস্থার বিঘ্ন ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থার ফলে ভারত প্রায় ২০০ কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়ে। সব মিলিয়ে, ভারতের মোট অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের অর্থনীতিও এই সংঘাতের প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল না। পাকিস্তানের কেএসই ১০০ সূচক ৪ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে বাজার মূলধনে ২ দশমিক ৫০ কোটি ডলার হারায়। পাকিস্তান সুপার লিগ স্থগিত হওয়ায় সম্প্রচার ও সংশ্লিষ্ট খাতে ক্ষতি হয় প্রায় ১ কোটি ডলার। আকাশসীমা বন্ধ থাকার ফলে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে ২ কোটি ডলার ক্ষতি হয়। প্রতিদিনের সামরিক খরচ গড়ে ছিল ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র অভিযানে ব্যয় হয় আরো ৩০ কোটি ডলার। বিনিয়োগের ওপর মাঝারি মাত্রার নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও, তার সুনির্দিষ্ট পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের মোট ক্ষতি দাঁড়ায় আনুমানিক ৪০০ কোটি ডলার।
এই ৮৭ ঘণ্টার সংঘাত ছিল এক অভূতপূর্ব উদাহরণ—যেখানে যুদ্ধ শুধু আকাশে বা সামরিক ঘাঁটিতে সীমাবদ্ধ ছিল না। এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল শেয়ারবাজারে, বিমানে, বিনিয়োগে এবং জনগণের মানসিক শান্তিতে। প্রতি ঘণ্টায় এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতির এই সংঘাত দেখিয়ে দিয়েছে, আধুনিক যুগে যুদ্ধের প্রকৃত খরচ শুধু গোলাবারুদে সীমাবদ্ধ নয়—বরং তার ব্যাপ্তি অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আস্থা এবং সমাজজীবনের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল অবলম্বনে

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us