বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন ডাটা তৈরি হচ্ছে প্রায় ৪০২ মিলিয়ন টেরাবাইট – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন ডাটা তৈরি হচ্ছে প্রায় ৪০২ মিলিয়ন টেরাবাইট

  • ১১/০৫/২০২৫

সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও কনটেন্ট, ক্লাউড সেবা, এআই টুল ও ই-কমার্স ব্যবহারের ফলে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ডিজিটাল ডাটা। ফলে অনেকটা নজিরবিহীন হারে বাড়ছে বৈশ্বিক ডাটা উৎপাদন। গত বছরের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে প্রায় ৪০২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন টেরাবাইট তথ্য। অনলাইন ডাটা বিশ্লেষণ প্লাটফর্ম এক্সপ্লোডিং টপিকসের গত মাসের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া, স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম, বিভিন্ন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি ও শেয়ার হওয়া তথ্যই ডিজিটাল ডাটা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর বিশ্বে প্রায় ১৮১ জেটাবাইট (১ বিলিয়ন টেরাবাইটে ১ জেটাবাইট) ডাটা উৎপন্ন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। এ বিপুল পরিমাণ তথ্যের মধ্যে ইন্টারনেট ট্রাফিকের অর্ধেকের বেশি অংশজুড়ে থাকবে ভিডিও কনটেন্ট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ারিং ও শর্ট ভিডিও অ্যাপগুলোর ব্যবহারে এ প্রবৃদ্ধি দ্রুততর হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে ডাটা সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও সুরক্ষার খাতগুলোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। বিশ্বের বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে আরো উন্নত তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা ও এআই-নির্ভর ডাটা ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ বাড়াতে শুরু করেছে। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছরই বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল ডাটা উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বে মোট যত ডাটা আছে, তার ৯০ শতাংশই তৈরি হয়েছে গত দুই বছরে। ২০১০ সালে যেখানে কেবল ২ জেটাবাইট ডাটা তৈরি হয়েছিল, ১৩ বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে হয়েছে প্রায় ৭৪ গুণ। ২০২৩ সালে উৎপন্ন ডাটার পরিমাণ চলতি বছর ১৫০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে ১৮১ জেটাবাইটে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলো বৈশ্বিক ডাটা উৎপাদনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কারণ এখানে প্রতিদিন কোটি কোটি ব্যবহারকারী সক্রিয়ভাবে কনটেন্ট শেয়ার করছে। অনলাইন প্লাটফর্ম ডিজিটাল সিল্কের তথ্যানুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে প্রতিদিন অন্তত ৫০ কোটি পোস্ট করা হয়, যা প্রায় ৫৬০ গিগাবাইট ডাটা তৈরি করে। অন্যদিকে ইনস্টাগ্রামে প্রতিদিন নয় কোটির বেশি ছবি ও ভিডিও আপলোড হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্চ রেজল্যুশনের মিডিয়া ব্যবহারের সঙ্গে বৈশ্বিক ডাটা ট্রাফিকে একটি বিশাল চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ইন্টারনেট অবকাঠামো ও ডাটা সংরক্ষণের জন্য স্থানের চাহিদা বাড়ছে।
এক্সপ্লোডিং টপিকসের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ডাটা ট্রাফিকের ৫৩ দশমিক ৭২ শতাংশের বেশি এখন ভিডিও কনটেন্টের দখলে। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোয় ভিডিওই এখন প্রধান মাধ্যম। সম্পূর্ণ ভিডিওভিত্তিক অ্যাপ টিকটক প্রতি বছরই ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। ফেসবুকেও বর্তমানে শেয়ার হওয়া কনটেন্টের ৫১ শতাংশই ভিডিও। এছাড়া ইউটিউবে ৪৮০পি রেজল্যুশনে ভিডিও দেখলে প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ মেগাবাইটের বেশি ডাটা খরচ হয়। তবে যদি একই ভিডিও ফোরকে বা আরো উন্নত রেজল্যুশনে দেখা হয়, তাহলে ডাটা ব্যবহার প্রায় ৩০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভিডিওভিত্তিক কনটেন্টের এ আধিপত্য আগামীতে আরো বাড়বে এবং বৈশ্বিক ডাটা ব্যবস্থাপনায় বড় ভূমিকা রাখবে। তারা বলছেন, ডিজিটাল ডাটার উত্থান নতুন সুযোগ ও জটিলতা দুটোই তৈরি করছে। ইতিবাচক দিক হিসেবে, ডাটার পরিমাণ বৃদ্ধি তথ্যের সহজ প্রবেশাধিকার, উন্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিংয়ের মতো ক্ষেত্রগুলোর উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করছে। তবে তথ্যের ভার কিছু উদ্বেগও নিয়ে এসেছে। যেমন ব্যক্তিগত ডাটার সুরক্ষাঝুঁকি এবং তথ্য ফাঁস ও সাইবার আক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us