অতিপ্রত্যাশিত বাণিজ্য সংলাপে সম্মত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৭:৪১ অপরাহ্ন

অতিপ্রত্যাশিত বাণিজ্য সংলাপে সম্মত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

  • ০৮/০৫/২০২৫

শিগগিরই আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে দুই অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এটি হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের পর দেশ দুটির মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ বৈশ্বিক আর্থিক বাজারগুলোকে নাড়া দেয়ার পাশাপাশি সরবরাহ চেইন নিয়েও ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে। এর মাঝে বাণিজ্য সংলাপকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। খবর এফটি।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার আগামী সপ্তাহের শুরুতে জেনেভায় চীনা প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বেইজিং থেকে আসা দলের নেতৃত্ব দেবেন চীনের শীর্ষ অর্থনীতিবিষয়ক কর্মকর্তা ভাইস প্রিমিয়ার হি লিফেং। জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান জেং। এরপর এটিই হবে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা।
আগামী শনি ও রোববার দুই বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে বৈঠক হবে বলে এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফক্স নিউজকে তিনি জানান, উচ্চ শুল্ক কোনো পক্ষের জন্যই টেকসই নয়। তাই এ আলোচনায় আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমার ধারণা, এটি হবে উত্তেজনা প্রশমনের আলোচনা, বড় চুক্তির নয়।’
বৈঠকটি এমন একসময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য প্রবেশের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। অন্যদিকে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে চীন। এ পাল্টাপাল্টি শুল্ক দুই দেশের পাশাপাশি বৈশ্বিক আর্থিক বাজারেও বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে। সে পরিস্থিতিতে মার্কিন-চীন বৈঠক অতিপ্রত্যাশিত ছিল। তাই চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে প্রথম ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে একে। গবেষণা সংস্থা এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক মার্কিন বাণিজ্য কর্মকর্তা ওয়েন্ডি কাটলার বলেন, ‘আমরা সবাই জানতাম যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে আলোচনায় বসতে হবে। তবে আজকের মুখোমুখি বৈঠকের খবর প্রত্যাশার চেয়ে বড়।’
সেই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘প্রত্যাশা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কারণ একে অন্যের ওপর শুল্ক বসানো অনেক সহজ, কিন্তু একসঙ্গে বসে সম্পর্ক স্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করা অনেক কঠিন।’
বেইজিং ও ওয়াশিংটনের সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ের অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক কমালে তবেই আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছিল চীন। তবে গত সপ্তাহে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় ‘কোনো ক্ষতি নেই’। এ থেকে বিষয়টি নিয়ে চীনের অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কে প্রথম আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে এ বিষয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘এখানে কোনো প্রথম আহ্বান নেই, বরং অনেক সময় ধরে যোগাযোগ হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেসে এক শুনানিতে বেসেন্ট জানান, মার্কিন প্রশাসন ১৮টি প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে ১৭টির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চীনের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বারবার আলোচনার ইঙ্গিত ও সম্ভাব্য শুল্ক রেহাইয়ের বার্তা পেয়ে তারা আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বৈশ্বিক প্রত্যাশা, চীনের নিজস্ব স্বার্থের পাশাপাশি মার্কিন ব্যবসা ও ভোক্তাদের আহ্বানের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবেচনার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হয়েছে তারা। তবে আলোচনাকে চাপ বা জিম্মি করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি চিপস, ইলেকট্রনিকস, কাঠ, তামা, ওষুধ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ আরো কিছু খাতে শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এমনকি বিদেশী সিনেমার ওপরও শতভাগ শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন তিনি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us