চীনা বিনিয়োগকারীদের টানতে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ৪,০৫৬ কোটি টাকার ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

চীনা বিনিয়োগকারীদের টানতে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ৪,০৫৬ কোটি টাকার ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প

  • ০৪/০৫/২০২৫

এর মধ্যে ২২১.১৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা) প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট হিসেবে চীনের সরকার থেকে আসার কথা রয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের বাকি ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা ১ শতাংশ সুদে সরকার থেকে অর্থায়নের প্রস্তাব করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে বেজা।
চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সরকার চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমিতে একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য একটি ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কর্মকর্তারা। প্রকল্পটির ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২২১.১৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা) প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট হিসেবে চীনের সরকার থেকে আসার কথা রয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের বাকি ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা ১ শতাংশ সুদে সরকার থেকে অর্থায়নের প্রস্তাব করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে বেজা। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন টিবিএসকে বলেন, ‘চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ ফাস্ট-ট্র্যাক করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। সরকারি যেসব অফিসের অনুমোদন নিতে হয়, সেগুলো আমরা খুব দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। আমরা নির্মাণকাজ শুরু করতে চাচ্ছি।
‘আর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গেলে চীনা বিনিয়োগকারীদের অনেক উদ্বেগ দূর হবে এবং তাদের বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়বে।’ ‘সাপোর্টিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্ট ফর চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন (সিআইইজেড)’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রস্তাব ইতিমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি জাতীয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন শেষে জুলাই থেকে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
এই প্রকল্পের আওতায় জেটি নির্মাণ করা হবে এবং জেটি থেকে সিআইইজেডকে সংযুক্ত করে সড়ক নির্মাণ, কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারসহ (সিইটিপি) প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। চীন সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২৯ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য চাঁদপুর জেলায় জিটুজি ভিত্তিতে আরও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ভোলা জেলায় একটি চীনা কোম্পানির জন্য আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছে বেজা।
আনোয়ারায় চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে কর্ণফুলী টানেল, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরসহ কাছাকাছি বিদ্যমান অবকাঠামোগুলোকে ব্যবহার করে সিআইইজেডকে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্লাস্টার এবং বাংলাদেশের শিল্পায়নে ভূমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চীনা স্টেকহোল্ডাররা মনে করেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করলে চীনা বিনিয়োগ বাড়বে, বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সহজতর হবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেগবান হবে। এই অঞ্চলগুলোকে বৃহত্তর প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগরীয় ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে শিল্প ক্লাস্টারিং ও আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের মূল সহায়ক হিসেবেও দেখা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৬৭ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিনিয়োগের পরিমাণ ১.৪১ বিলিয়ন ডলার ও হংকং থেকে বিনিয়োগের পরিমাণ ১.২৬ বিলিয়ন ডলার।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us