ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই পানামা খালের আশপাশে চীনা বন্দর অপারেটরদের অপসারণের চাপ দিয়ে আসছেন। শনিবার তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে সুয়েজ খালের দিকেও মনোযোগ আকর্ষণ করেন। পানামা ও সুয়েজ খাল দিয়ে মার্কিন জাহাজগুলোর বিনামূল্যে চলাচলের দাবি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময় বৈশ্বিক বাণিজ্য ও নৌ-পরিবহনে মার্কিন প্রভাব বাড়ানোর প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। খবর নিউজ উইক।
ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই পানামা খালের আশপাশে চীনা বন্দর অপারেটরদের অপসারণের চাপ দিয়ে আসছেন। শনিবার তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে সুয়েজ খালের দিকেও মনোযোগ আকর্ষণ করেন। ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে সংযুক্তকারী এই খাল বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, ‘সামরিক ও ব্যবসায়িক দুই ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজকে বিনামূল্যে পানামা ও সুয়েজ খালের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণের অনুমতি দেয়া দরকার।‘
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ওই খালগুলোর অস্তিত্ব নেই দাবি করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প। তার এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য চীনের বাণিজ্যিক জাহাজ পরিবহন ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে চাপে রাখা। আর নিজেদের শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, চীন এখন পানামা খাল ‘পরিচালনা’ করছে। বাস্তবে, চীন এই খালের একটি প্রধান ব্যবহারকারী হলেও খাল পরিচালনার দায়িত্ব চীনের হাতে নেই। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের সরাসরি উল্লেখ না করলেও এর জবাব দিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করে তিনি বলেছেন, পানামা খালের টোল ফি নির্ধারণ এবং পরিচালনার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পানামা খাল কর্তৃপক্ষের (এসিপির) হাতে, যা একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। এর বিপরীতে কোনো চুক্তি নেই বলেও জানিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, এই মাসে পানামা সফর করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ। সেসময় তিনি প্রস্তাব করেন মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো যেন ‘প্রথমে এবং বিনামূল্যে’ খাল অতিক্রম করতে পারে। এছাড়া, তিনি খাল রক্ষার জন্য আবারো মার্কিন সেনাদের পানামায় মোতায়েনের প্রস্তাব দেন, যা পানামার সরকার তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে। বিশ্ব বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুটি নৌপথ — পানামা খাল এবং সুয়েজ খাল — বর্তমানে আন্তর্জাতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আমেরিকা ও চীন পানামা খালের প্রধান ব্যবহারকারী হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সুয়েজ খালকেও প্রভাবিত করেছে। ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সুয়েজ খালের রুটে চলাচলকারী ফিলিস্তিনি বিরোধী দেশগুলোর বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। এর ফলে অনেক জাহাজই বাধ্য হয়ে আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে যাত্রা করছে, যা সময় এবং খরচ — উভয়ই বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মিশর জানিয়েছে, ২০২৪ সালে সুয়েজ খালের রাজস্ব ৬০ শতাংশ কমে গেছে, এতে ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন