পাঁচ বছরে বৈশ্বিক জিডিপি বাড়াবে ফাইভজি আইওটি ও এআই – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১২:১২ অপরাহ্ন

পাঁচ বছরে বৈশ্বিক জিডিপি বাড়াবে ফাইভজি আইওটি ও এআই

  • ২৭/০৪/২০২৫

বিশ্ব অর্থনীতিতে মোবাইল প্রযুক্তি ও পরিষেবার ভূমিকা দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে বৈশ্বিক জিডিপিতে খাতটির অবদান প্রায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা প্রায় ৬ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন বা ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলার অর্থনৈতিক মূল্যের সমতুল্য। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।  বিশ্বব্যাপী মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) চলতি মাসে এসব তথ্য জানিয়েছে। খবর আইটিএজ নিউজ।

জিএসএমএ বলছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে মোবাইল খাতের অবদান বাড়ার পেছনে মূল কারণ বিভিন্ন দেশের মোবাইল পরিষেবা ও ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নত ব্যবহারের সুফল। ফাইভজি, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো প্রযুক্তি শিল্পোৎপাদন এবং দক্ষতা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখছে। স্মার্টফোন, অ্যাপ, ইন্টারনেট সেবার মতো মোবাইল প্রযুক্তি বিশ্ব অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে মোবাইল প্রযুক্তি ও সেবার, বিশেষ করে ফাইভজি প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়েছে জিএসএমএ। সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে খাতটি বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এছাড়া জিএসএমএ বিভিন্ন আঞ্চলিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে ফাইভজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরা হয়—বিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মতো অঞ্চলে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সাব-সাহারান আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে—বিশেষ করে নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর ও কেনিয়ায় ফাইভজি প্রযুক্তি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালুর ফলে বহু শিল্প খাতে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা মিলছে। তাৎক্ষণিক ডাটা আদান-প্রদানের ওপর নির্ভরশীল খাতগুলো বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট অব থিংস ও এআই অ্যাপ্লিকেশন। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি বছর বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ফাইভজি নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মতে, এটি ধীরে ধীরে যোগাযোগের সংজ্ঞা বদলে দেবে। জিএসএমএর তথ্যানুযায়ী, সম্প্রতি ফাইভজি প্রযুক্তির বিস্তার আগের সব পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী ফাইভজি সাবস্ক্রিপশন ১৬ কোটি ৩০ লাখ বেড়ে ২১০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। বছরের শেষে এ সংখ্যা আরো বেড়ে প্রায় ২৩০ কোটিতে পৌঁছায়, যা বৈশ্বিক মোবাইল সাবস্ক্রিপশনের ২৫ শতাংশের বেশি। উচ্চ গতির ইন্টারনেটের চাহিদা, বিস্তৃত নেটওয়ার্ক কভারেজ ও স্মার্ট সিটি প্রকল্প সম্প্রসারণের কারণে আইওটি ডিভাইসের বাড়তি চাহিদা এ প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে গ্রাহকরা ফাইভজি নেটওয়ার্কে চলে যাওয়ায় ফোরজির ব্যবহার ধীরে ধীরে কমছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাইভজি শুধু একটি নতুন প্রযুক্তি নয়, এটি এক নতুন যুগের সূচনা। কারণ সামনের দিনগুলোয় সংযোগ আরো নমনীয় ও সহজে মানিয়ে নেয়ার মতো হবে। নেটওয়ার্কগুলো ব্যবহারকারীর নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্ষমতা সামঞ্জস্য করবে। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের কাছে পৌঁছে ফাইভজি প্রযুক্তি মোবাইল শিল্প ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। বিশ্বব্যাপী ফাইভজি নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে আছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশ ব্যাপক নেটওয়ার্ক স্থাপনা ও ফাইভজি সমর্থিত ডিভাইসের কারণে এগিয়ে রয়েছে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে প্রথম ফাইভজি নেটওয়ার্কের বাণিজ্যিক পরিষেবা চালুর পর থেকে দেশগুলো এ প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us