ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেঃ লাংটাং গ্রাম এক দশকে পর্যটনের সুদিন ফিরছে নেপালে – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেঃ লাংটাং গ্রাম এক দশকে পর্যটনের সুদিন ফিরছে নেপালে

  • ২৬/০৪/২০২৫

পুনর্নিমাণের ফলে গ্রামটি এখন আরো আধুনিক ও পর্যটকবান্ধব হয়ে উঠেছে। ভূমিকম্পের আগে এখানে মূলত ছোট চা-ঘর আর পাথর ও কাঠনির্মিত ঘর ছিল। এখন সেসব জায়গায় কংক্রিটের বহুতল ভবন, গেস্ট হাউস আর আধুনিক রান্নাঘর। গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারই তাদের ঘরকে গেস্ট হাউসে রূপান্তর করেছে।২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় নেপাল। সে সময় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর একটি ছিল লাংটাং। ভূমিকম্পের পরপরই হিমবাহ থেকে বিশাল এক তুষারধস নামে, যা আনুমানিক ৪ কোটি টন পাথর ও বরফ নিয়ে লাংটাংয়ের ওপর নেমে আসে। পুরো গ্রামটি মাটির সঙ্গে মিশে যায়।এ দুর্ঘটনায় গ্রামের প্রায় ৩০০ জন প্রাণ হারান। আর ভূমিকম্পের ফলে পুরো নেপালে নিহতের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার। তবে সে ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে নেপাল, উঠে দাঁড়িয়েছে লাংটাং গ্রামও। এলাকাটি এখন পুনরায় জনবসতিপূর্ণ, সেই সঙ্গে লাংটাং এখন বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আর স্থানীয় সরকারের প্রচেষ্টায় ভয়াবহ সে ভূমিকম্পের এক দশকের মধ্যে লাংটাং এখন আবার জীবন্ত। বর্তমানে এটি বিশ্বের ট্রেকিংপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য। এখানে পাহাড়ের ঢালে ইয়াক চরে বেড়ায়, পথে পথে ঝুলে থাকে প্রার্থনা পতাকা। পর্যটকেরা থেমে থেমে দেখতে পান ভূমিকম্প স্মৃতিস্তম্ভ, যেখানে হারিয়ে যাওয়া জীবনগুলোর স্মরণে পাথরে খোদাই করা হয়েছে বৌদ্ধ মন্ত্র।

পুনর্নিমাণের ফলে গ্রামটি এখন আরো আধুনিক ও পর্যটকবান্ধব হয়ে উঠেছে। ভূমিকম্পের আগে এখানে মূলত ছোট চা-ঘর আর পাথর ও কাঠনির্মিত ঘর ছিল। এখন সেসব জায়গায় কংক্রিটের বহুতল ভবন, গেস্ট হাউস আর আধুনিক রান্নাঘর। গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারই তাদের ঘরকে গেস্ট হাউসে রূপান্তর করেছে। যেখানে ওয়াইফাইসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। পশুপালন ও ঔষধি গাছ সংগ্রহের মতো ঐতিহ্যবাহী জীবন-জীবিকা ছেড়ে পর্যটন ব্যবসায় ঝুঁকছেন অধিকাংশ বাসিন্দারা। যা আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বদলে গেছে গ্রামটির সংস্কৃতি ও সামাজিক পরিবেশও। নতুন প্রজন্ম উচ্চতর পড়াশোনা আর উন্নত জীবনের আশায় শহরমুখী। প্রথাগত পেশার পরিবর্তনে পরিপূর্ণ খুশি হতে পারছেন না অনেকে। স্থানীয়রা বলছেন, আজকের লাংটাং যেন দুই জগতে বাস করে—একদিকে পর্যটনের ঝলমলে মুখ, অন্যদিকে ক্ষতবিক্ষত স্মৃতির ভার। তাদের মতে, গ্রামটি যা হারিয়েছে, তা কোনোদিন ফেরত আসবে না। কিন্তু তারা একটা নতুন লাংটাং গড়েছে, যা তাদের সন্তানদের অপার সম্ভাবনাময় আগামী দেবে।

— আল জাজিরা

 

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us