এক দশক পর আবার শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পরিত্যক্ত আকাশচুম্বী ভবনের নির্মাণকাজ – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন

এক দশক পর আবার শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পরিত্যক্ত আকাশচুম্বী ভবনের নির্মাণকাজ

  • ২৬/০৪/২০২৫

চীনের তিয়ানচিন শহরে ৫৯৭ মিটার (১,৯৫৯ ফুট) উচ্চতার ‘গোল্ডিন ফাইন্যান্স ১১৭’ ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৮ সালে। ১১৭ তলা বিশিষ্ট এই টাওয়ারটি তখন চীনের সবচেয়ে উঁচু ভবন হওয়ার কথা ছিল। এক দশক পর বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কিন্তু পরিত্যক্ত আকাশচুম্বী ভবনের নির্মাণকাজ আবারও শুরু হতে পারে বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। চীনের তিয়ানচিন শহরে ৫৯৭ মিটার (১,৯৫৯ ফুট) উচ্চতার ‘গোল্ডিন ফাইন্যান্স ১১৭’ ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৮ সালে। ১১৭ তলা বিশিষ্ট এই টাওয়ারটি তখন চীনের সবচেয়ে উঁচু ভবন হওয়ার কথা ছিল। শক্তিশালী বাতাস ও ভূমিকম্প প্রতিরোধে বিশেষ ‘মেগা কলাম’ ব্যবহার করে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। এর ওপরের অংশে হীরা আকৃতির একটি খোলা জায়গা আছে, যেখানে সুইমিং পুল ও পর্যবেক্ষণ মঞ্চ থাকার কথা। ওপরের তলাগুলোতে অফিস ও পাঁচতারা হোটেল বানানোর পরিকল্পনা ছিল।

তবে ২০১৫ সালে চীনের শেয়ারবাজারে বড় ধস নামে। এতে ভবন নির্মাতা হংকংভিত্তিক কোম্পানি ‘গোল্ডিন প্রপার্টিজ’ আর্থিক সমস্যায় পড়ে এবং নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা পান সুতোং এক সময় হংকংয়ের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন। এখন কোম্পানিটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে ভবনটির নির্মাণকাজ আবার শুরু হতে পারে এবং ২০২৭ সালে শেষ হতে পারে। নতুন একটি নির্মাণ অনুমোদনপত্রে ভবনটির চুক্তিমূল্য প্রায় ৫৬৯ মিলিয়ন ইউয়ান ($৭৮ মিলিয়ন) উল্লেখ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম ভবনটি থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। তবে ভবনটি আগের মতোই ব্যবহৃত হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ‘পি অ্যান্ড টি গ্রুপ’ ও ‘বিজিআই ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্টস’ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। গত এক দশকে চীনের বিভিন্ন শহরে অপূর্ণাঙ্গ ও পরিত্যক্ত আকাশচুম্বী ভবন দেখা যাচ্ছে, যা দেশটির রিয়েল এস্টেট খাতের সংকটের প্রতিচ্ছবি। ২০২০ সালে চীনের আবাসন মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন ৫০০ মিটারের বেশি উচ্চতার নতুন ভবন নির্মাণ নিষিদ্ধ করে। এর অন্যতম কারণ ছিল অনিয়ন্ত্রিত বিনিয়োগ ঠেকানো। এদিকে, সোমবার চীনের ‘গ্রীনল্যান্ড গ্রুপ’ জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চেংদুতে ৪৬৮ মিটার (১,৫৩৫ ফুট) উঁচু ‘চেংদু গ্রীনল্যান্ড টাওয়ার’-এর নির্মাণকাজও আবার শুরু হচ্ছে। ২০২৩ সালে আর্থিক সমস্যার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত এই কোম্পানির প্রকল্পটি স্থগিত হয়েছিল।

ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং চীনের রিয়েল এস্টেট বিষয়ে দুইটি বইয়ের লেখক কিয়াও শিতং বলেছেন, একসঙ্গে দুটি বড় নির্মাণ প্রকল্প আবার শুরু হওয়া সম্ভবত কাকতালীয় কিছু নয়। এক ভিডিও কলের মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তারা রিয়েল এস্টেট বাজারকে স্থিতিশীল করতে চায়। তাই তারা স্থানীয় সরকারগুলোকে এই খাতকে আবার জাগিয়ে তোলার উৎসাহ দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি শুধু আকাশচুম্বী ভবনের ব্যাপার নয় — সরকার আসলে বাজারকে একটা বার্তা দিচ্ছে।’

অর্থনৈতিক সমস্যা ও কড়া নিয়ম থাকা সত্ত্বেও চীন এখনও বিশ্বের আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণে শীর্ষে। ‘কাউন্সিল অন টল বিল্ডিংস অ্যান্ড আরবান হ্যাবিট্যাট’-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বে ২০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ১৩৩টি ভবন তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ৯১টি নির্মাণ করা হয়েছে চীনে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us