মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (এমইএনএ) অঞ্চলে গত মাসে স্টার্টআপ বিনিয়োগে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। খাতটিতে বিনিয়োগ ২০২৩ সালের মার্চের তুলনায় ৭৬ শতাংশ কমে ১২ কোটি ৭৫ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। এ সময় সম্পাদন হয়েছে ২৮টি চুক্তি। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ৫৩ কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি বাগিয়ে নেয়ে এখানকার স্টার্টআপগুলো। খবর আরব নিউজ।
ঋণভিত্তিক অর্থায়ন বাদ দিয়েও মার্চে পতন লক্ষ করা গেছে। বিনিয়োগ পতনের কারণ হিসেবে বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তাকে উল্লেখ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মার্কিন শুল্কজনিত পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিগুলোকে প্রভাবিত করেছে। এতে বিনিয়োগ ও চুক্তিমূল্য উভয়ই বার্ষিক ভিত্তিতে ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সৌদি আরবের এলইএপি কনফারেন্সের মতো বড় স্টার্টআপ ইভেন্টের ভূমিকা ছিল। মার্চে আঞ্চলিক স্টার্টআপ বিনিয়োগে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে, ১৪টি লেনদেনে দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ কোটি ৪৪ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মিসর, যেখানে চারটি চুক্তি থেকে সংগ্রহ হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ডলার। অন্যদিকে সৌদি আরবের পাঁচটি স্টার্টআপ চুক্তির মূল্য ছিল ৮০ লাখ ডলার। গত মাসের ধীরগতির পরও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে মোট ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ পাওয়া গেছে। অর্থের এ পরিমাণ ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৪৪ শতাংশ বেশি।
মার্চে ফিনটেক খাতে ১০টি চুক্তির মাধ্যমে ৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ এসেছে। প্রথম প্রান্তিকে এ খাত ৩৬টি স্টার্টআপের মাধ্যমে ১০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে। এর পরেই রয়েছে হেলথটেক (১ কোটি ৬০ লাখ) ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (১ কোটি ৪০ লাখ ডলার)। তবে সফটওয়্যার-অ্যাজ-এ-সার্ভিস (এসএএএস) স্টার্টআপগুলো পরপর দুই মাস কোনো ফান্ডিং পায়নি। মার্চে বিনিয়োগ পাওয়া ৭০ শতাংশ কোম্পানি ছিল প্রাথমিক পর্যায়ভুক্ত, এর চুক্তিমুল্য ৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। পরবর্তী পর্যায়ের কোম্পানিগুলো পেয়েছে ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিনিয়োগ। এ সময় ঋণভিত্তিক অর্থায়নও কমেছে, যা মোট বিনিয়োগের ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) স্টার্টআপগুলো পেয়েছে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অন্যদিকে বিজনেস-টু-কনজিউমার (বিটুসি) স্টার্টআপগুলো তুলেছে ২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এছাড়া মার্চে কোনো নারী-প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপ ফান্ডিং পায়নি, যা ব্যবসায়িক উদ্যোগে লৈঙ্গিক সমতার ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা। এ সময় পুরুষ-প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগগুলো পেয়েছে ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিনিয়োগ, আর বাকিটুকু গেছে পুরুষ-নারী যৌথ প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে।
মন্তব্য করুন