বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতের পূর্বাঞ্চলে চালের দাম ১৬% কমেছে – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন

বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতের পূর্বাঞ্চলে চালের দাম ১৬% কমেছে

  • ২৩/০৪/২০২৫

বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৫ এপ্রিল থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভারতের চাল আমদানি বন্ধই থাকবে বলে সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বেনাপোল বন্দরের পরিচালক।
সম্প্রতি বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত এবং দেশটির স্থানীয় পর্যায়ে নতুন ধান ওঠার ফলে গত দশ দিনে ভারতের পূর্বাঞ্চলে চালের দাম ১৬ শতাংশ কমেছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে চালের দাম আরও কমতে পারে। ভারত প্রতি মাসে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ মিনিকেট চাল বাংলাদেশে রপ্তানি করত। সেই চালের দাম কেজিপ্রতি ৬২ রুপি থেকে কমে বর্তমানে ৫৩ রুপিতে নেমে এসেছে। ভারতের বাকি অংশে গত ডিসেম্বরেই চালের দাম কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বেসরকারি রপ্তানি জোরদার থাকায় পূর্ব ভারতের বাজারে তখনও চালের দাম বেশি ছিল।
ভারতীয় চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হালদার ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেশব কুমার হালদার বলেন, ‘বাংলাদেশে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ চালের বেসরকারি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ সরকার সরকারিভাবে আমদানি করত। বেসরকারি আমদানিতে এই রূপান্তর একটি কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে চালের দাম চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে ওঠানামা করতে থাকে।’
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার আগে সেদ্ধ চালের এমন কোনো বেসরকারি আমদানির অর্ডার ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ সরকার চাল আমদানি করেনি এবং প্রয়োজনে কেবল সরকারিভাবেই আমদানি করত বলে জানান হালদার। বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৫ এপ্রিল থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভারতের চাল আমদানি বন্ধই থাকবে বলে সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বেনাপোল বন্দরের পরিচালক। গত বছরের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার দেশের প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৯২ জন আমদানিকারককে ভারত থেকে চাল আনার অনুমতি দেয়। এ সময় ২ লাখ ৭৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে ভারতের চাল রপ্তানি গতি পায়। পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে চাল আমদানি করলে বাংলাদেশের আমদানিকারকদের খরচ অনেক কম পড়ে।
ভারতীয় চাল রপ্তানি ও বিপণন সংস্থা রাইসভিলার প্রধান নির্বাহী সুরজ আগরওয়াল বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ১ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার টন সেদ্ধ মিনিকেট চাল উৎপাদিত হয়েছে। যখন দেশের অন্যান্য অঞ্চলে চালের দাম কমছিল, তখন বিপরীতে পূর্বাঞ্চলে দাম বেড়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ নিজের চাহিদা মেটানোর পর ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে সেদ্ধ চাল সরবরাহ করে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম কেজিপ্রতি ৪৫ রুপি থেকে বেড়ে ৬২ রুপি পর্যন্ত পৌঁছায়।’ আগরওয়াল বলেন, সেদ্ধ মিনিকেট চালের উচ্চমূল্যের কারণে অনেকেই সস্তা ধরনের অন্যান্য চালের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘মিনিকেট চালের চাহিদা কমে যাওয়া এবং বাংলাদেশ বেসরকারি পথে চাল আমদানি না করার ঘোষণা দেওয়ায় দাম পড়তে শুরু করেছে। বাজারে নতুন চাল আসতে থাকলে দাম আরও কমতে পারে।’

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us