বিশ্বব্যাপী ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমের দুনিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ওএস মাইক্রোসফট উইন্ডোজ। চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১০০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারের মধ্যে ৭২টিতেই চলছে উইন্ডোজ। অন্যদিকে অ্যাপলের ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। কোম্পানিটি বর্তমানে এ বাজারের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ দখলে রেখেছে। এছাড়া বিগত কয়েক বছরে লিনাক্স ও গুগলের ক্রোম ওএসের অবস্থান স্থির রয়েছে। জার্মানভিত্তিক অনলাইন ডাটা প্লাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন বলছে, উন্মোচনের পর থেকে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অনেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। উইন্ডোজ ৯৫, উইন্ডোজ এক্সপি ও উইন্ডোজ ৭ ছিল এর কিছু জনপ্রিয় সংস্করণ। মাইক্রোসফটের সর্বশেষ ভার্সন হলো উইন্ডোজ ১১, যা পিসিসহ ট্যাবলেট ও বিশেষ কিছু ডিভাইসেও চালানো যায়। এর পরবর্তী সংস্করণ উইন্ডোজ ১২ চলতি বছর মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। কোম্পানির তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ কম্পিউটার উইন্ডোজ ইনস্টলসহ বিক্রি হয়েছে।
অন্যদিকে অ্যাপলের ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম দীর্ঘ ইতিহাসের মধ্য দিয়ে বহু সংস্করণে পরিবর্তিত হয়েছে। ম্যাকওএস নামে পরিচিত এ অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ হলো ম্যাকওএস ভেনচুরা। যদিও এটি ১৯তম রিলিজ, তবে ক্যাটালিনা নামে পুরনো একটি সংস্করণ এখনো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অ্যাপল কম্পিউটারে এটি চলেছে। ম্যাকওএস শুধু অ্যাপলের ম্যাক কম্পিউটারে চলে, যার মধ্যে রয়েছে ম্যাকবুক (ম্যাকবুক প্রো ও ম্যাকবুক এয়ার) এবং ডেস্কটপ কম্পিউটার আইম্যাক। এদিকে উইন্ডোজ বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি হাজারো কম্পিউটারে ব্যবহার হয়, যেমন ডেল, এইচপি, লেনোভো, অ্যাসার ইত্যাদি। এছাড়া দুই ওএসের মধ্যে দামেও বেশ তারতম্য রয়েছে। উইন্ডোজ-চালিত পিসির দাম তুলনামূলকভাবে কম, যা সাধারণ ব্যবহারকারীর নাগালে থাকে। ম্যাক কম্পিউটার অনেকের জন্য সাশ্রয়ী নয়। এছাড়া বিশ্বের অধিকাংশ ব্যবসা ও সরকারি প্রতিষ্ঠান উইন্ডোজনির্ভর সিস্টেম ব্যবহার করে।
মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিলে। সে হিসাবে চলতি বছর ৫০ বছরে পা রাখল সফটওয়্যার কোম্পানিটি। শৈশবের দুই বন্ধু বিল গেটস ও পল অ্যালেন মিলে নির্মাণ করেন মাইক্রোসফট। গত ৫০ বছরে কখনো উন্নতি, কখনো ঝুঁকি—সবকিছুই পেরিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর একটা প্রজন্ম কম্পিউটার বলতে শুধু মাইক্রোসফটকেই চিনেছে।
তবে ইতিবাচক আলোচনার সঙ্গে সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যাকে ঘিরে সমালোচনায়ও জড়িয়েছে সফটওয়্যার কোম্পানিটি। সম্প্রতি কোম্পানির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বক্তব্য চলাকালেই কর্মীরা প্রতিবাদ জানান। এদের মধ্যে ইবতিহাল আবুসসাদ ও ভানিয়া আগরওয়াল নামে দুই কর্মী প্রতিবাদ জানানোর পরপরই চাকরি হারান।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন