বেইজিং এ বছর প্রায় ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন সহজ নয়, কারণ দীর্ঘমেয়াদি রিয়েল এস্টেট সংকট, কম অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক শুল্ক অর্থনীতিকে চাপে ফেলছে। চীনের অর্থনীতি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বার্ষিক ভিত্তিতে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তবে এই প্রবৃদ্ধির মধ্যেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যযুদ্ধ নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। খবর বিবিসি।
চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হওয়া পণ্যের ওপর এখন ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যেখানে চীনে প্রবেশকারী মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত চীন এই উচ্চ শুল্কের পূর্ণ প্রভাব মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও ধীরগতির প্রবৃদ্ধি এখনো দেশটির অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। চীনের সদ্য প্রকাশিত প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফল দেখিয়েছে। বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদ ধারণা করেছিলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে। কিন্তু বেইজিং জানিয়েছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই তথ্য এমন একটি সময়কালকে আওতায় নিয়েছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ১৪৫ শতাংশে পৌঁছায়নি। ফলে কিছুটা প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে শিল্পকারখানার জোরেশোরে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে, যাতে পণ্য আগেভাগেই তৈরি করে রফতানি করা যায়। অর্থনীতির পরিভাষায় একে বলা হয় ‘ফ্রন্ট লোডিং’। বেইজিং এ বছর প্রায় ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন সহজ নয়, কারণ দীর্ঘমেয়াদি রিয়েল এস্টেট সংকট, কম অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক শুল্ক অর্থনীতিকে চাপে ফেলছে। এমন এক সময়ে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে মালয়েশিয়া সফরে রয়েছেন। অন্যদিকে, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য আরোপিত নতুন উচ্চ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন। তবে এর আওতা থেকে চীনকে স্পষ্টভাবে বাদ রাখা হয়েছে। এদিকে, যেসব দেশ বর্তমানে ১০ শতাংশের মৌলিক শুল্কের মুখোমুখি, তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে করে ভবিষ্যতের উচ্চতর শুল্ক থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন