দীর্ঘ হচ্ছে বেকারত্বের সময়, যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার শঙ্কা বাড়ছে – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

দীর্ঘ হচ্ছে বেকারত্বের সময়, যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার শঙ্কা বাড়ছে

  • ১৬/০৪/২০২৫

গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে যারা এরই মধ্যে বেকার তাদের চাকরি পেতে আগের তুলনায় বেশি সময় লাগছে, ফলে বাড়ছে বেকারত্বের গড় সময়। শ্রমবাজারের সূক্ষ্ম কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ সূচক যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছে। মার্কিন সান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি বড় অর্থনৈতিক মন্দার আগে দুটি স্পষ্ট প্রবণতা দেখা গেছে। প্রথমত, যারা বেকার তাদের পক্ষে শ্রমবাজারে ফিরে আসা কঠিন ও সময়সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ বেকারত্বের মেয়াদ বেড়েছে। বর্তমানেও একই প্রবণতা ফের দেখা যাচ্ছে, যা অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারের এ তথ্যগুলো উঠে এল সান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিবেদনে।
গবেষক দল বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রতি মাসে বেকারদের চাকরি পাওয়ার হার উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। এ প্যাটার্ন ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট এবং তার আগের বেশ কয়েকটি মন্দার পূর্ববর্তী অবস্থার সঙ্গে আশ্চর্য রকমের মিল দেখায়। ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে বেকার থাকার গড় সময় প্রায় আট থেকে বেড়ে ১০ সপ্তাহের বেশি হয়েছে। এটি ২০০৭-০৯ সালের আর্থিক সংকটের সময়ের ১০ সপ্তাহের শীর্ষস্তরের কাছাকাছি।
গবেষকরা সতর্ক করে বলছেন, যদিও অতীতের তুলনায় সাম্প্রতিক বেকারত্ব বৃদ্ধির পরিমাণ এখনো কম, তবু মন্দার ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাব্য লক্ষণগুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে। বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্কনীতি শ্রমবাজারে চাপ সৃষ্টি করেছে। এ নীতির ফলে একদিকে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, অন্যদিকে কিছু খাতে উৎপাদন ও নিয়োগ কমে গেছে। ফলে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে ধীরগতিতে। ফেডের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বেকারত্বের হার তুলনামূলকভাবে এখনো কম এবং শ্রমবাজার শক্তিশালী রয়েছে। তবে সান ফ্রান্সিসকো ফেডের গবেষকরা সতর্ক করছেন, এ সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা মন্দার স্পষ্ট ইঙ্গিত হতে পারে।
তাদের মতে, যদিও বর্তমান বেকারত্ব বৃদ্ধির হার অতীতের তুলনায় কম, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত এমন প্রবণতা বড় সংকটের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তাই এ পরিবর্তনগুলোকে অবহেলা করা ঠিক হবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্রমবাজারের এ পরিবর্তনগুলো শুধু অর্থনীতির ওপর নয়, সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে বেকারত্ব বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ব্যক্তি আয়ের স্তর, ভোগব্যয় এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা। পরিস্থিতির উন্নয়ন বা অবনতি নির্ভর করবে নীতিনির্ধারকদের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের ওপর। তবে এখনই এ ইঙ্গিতগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে নীতিগত প্রস্তুতি নেয়া জরুরি। এর আগে ৫ এপ্রিল মন্দার পূর্বাভাস দিয়েছিল জেপি মরগান। চলতি বছরেই মার্কিন অর্থনীতি মন্দার মুখোমুখি হতে পারে বলে তাদের অনুমান। বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ বলে জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে তাদের পূর্বাভাস ছিল মন্দার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ। অবশ্য ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিতের ঘোষণার পর আগের অবস্থানে ফিরে গেছে জেপি মরগান। অর্থাৎ তখন তারা বলেছে, মন্দার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us