শুল্কনীতির প্রভাব বড় পরিবর্তনের মুখোমুখি বৈশ্বিক স্মার্টফোনের বাজার – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন

শুল্কনীতির প্রভাব বড় পরিবর্তনের মুখোমুখি বৈশ্বিক স্মার্টফোনের বাজার

  • ০৯/০৪/২০২৫

বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোনের বাজার বর্তমানে বড় পরিবর্তনের মুখোমুখি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত নতুন শুল্ক (৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত) এরই মধ্যে স্যামসাং ও অ্যাপলের মতো প্রধান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। তাছাড়া সরবরাহ চেইনের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোর ওপর শুল্ক কার্যকর হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোথায় ও কীভাবে স্মার্টফোন উৎপাদন করা যাবে সে বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। খবর দ্য স্ট্রেইট টাইমস।
স্যামসাং মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলের তুলনায় কিছুটা সুবিধা পেতে পারে। কারণ প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ফোনগুলো বিভিন্ন দেশে তৈরি করে থাকে, যেখানে অ্যাপল মূলত চীননির্ভর।
স্যামসাং প্রতিদিন ভিয়েতনামে ১০ কোটিরও বেশি স্মার্টফোন উৎপাদন করে, যা প্রতিষ্ঠানটির মোট উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি। বাক নিনহ ও থাই নগুয়েনে অবস্থিত কারখানাগুলোয় উৎপাদিত স্মার্টফোনগুলো বর্তমানে ট্রাম্পের শুল্কনীতির আওতায় ৪৩ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন হচ্ছে।
স্যামসাংয়ের আরো ৩০ শতাংশ ফোন ভারতে তৈরি হয়, যেখানে বর্তমানে ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বাকি ফোনগুলো ব্রাজিলে, ইন্দোনেশিয়ায় ও দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি হয়, যেখানে শুল্কের পরিমাণ যথাক্রমে ১০, ৩২ ও ২৫ শতাংশ।
অন্যদিকে অ্যাপল তার প্রায় ৯০ শতাংশ আইফোন চীনে তৈরি করে। ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব চীনের ওপরেই পড়েছে সবচেয়ে বেশি। দেশটি মোট ৫৪ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন। এর মধ্যে ৩৪ শতাংশ রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক এবং আগে থেকেই আরোপ করা ২০ শতাংশ শুল্ক অন্তর্ভুক্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোনের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে। যদি অ্যাপল অতিরিক্ত এ খরচ গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দেয়। তবে আইফোন ১৬ সিরিজের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। রোসেনব্ল্যাট সিকিউরিটিজের তথ্যমতে, আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের ১ টেরাবাইট স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের দাম ২ হাজার ৩০০ ডলারে বিক্রি হতে পারে, যা বর্তমানের ১ হাজার ৫৯৯ ডলার থেকে ৪৩ শতাংশ বেশি। আইফোন ১৬-এর দাম ৭৯৯ ডলার থেকে বেড়ে প্রায় ১ হাজার ১৪২ ডলার হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ শুল্ক এড়াতে আরো বেশি পরিমাণে উৎপাদন ব্রাজিল ও দক্ষিণ কোরিয়ায় স্থানান্তর করতে পারে স্যামসাং। কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিকস অ্যান্ড ট্রেডের অধ্যাপক কিউং হি-কোয়ান বলেন, ‘স্যামসাংয়ের কাছে কোরিয়া বা ব্রাজিলে মার্কিন বাজারের জন্য ফোন তৈরি করার সুযোগ আছে, যেখানে শুল্ক তুলনামূলকভাবে কম।’ কিছুটা আশার আলো দেখছে স্যামসাং। ৪ এপ্রিল ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্লাটফর্মে পোস্ট করেন, ‘আজ আমি ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক তো লামের সঙ্গে একটি খুব ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে পারে, তবে ভিয়েতনাম তাদের শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনতে চায়।’
২ এপ্রিল শুল্ক ঘোষণার আগে গ্যালাক্সি এস২৫ মডেল যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ সম্পন্ন করেছে স্যামসাং। তবে প্রতিষ্ঠানটির আসন্ন ফোল্ডেবল ফোনগুলো প্রভাবিত হতে পারে। বর্তমানে স্যামসাং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ২০ শতাংশ হিস্যা নিজেদের দখলে রেখেছে। নতুন শুল্কের আওতায় বাজার হিস্যা বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের হতে পারে, যদি ট্রাম্প অ্যাপলকে আবার শুল্ক ছাড় দেন।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us