ট্রাম্প ও মাস্কের বিরুদ্ধে ‘হ্যান্ডস অফ’ আন্দোলনে উত্তাল আমেরিকা – The Finance BD
 ঢাকা     রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্প ও মাস্কের বিরুদ্ধে ‘হ্যান্ডস অফ’ আন্দোলনে উত্তাল আমেরিকা

  • ০৬/০৪/২০২৫

‘হ্যান্ডস অফ!’ শিরোনামে এই বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি শনিবার (৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয়। নাগরিকদের অধিকারে সরকারের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করা এ বিক্ষোভকে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক থেকে শুরু করে আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাজার হাজার ক্ষুব্ধ মানুষ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছেন। ‘হ্যান্ডস অফ!’ শিরোনামে এই বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি শনিবার (৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয়। নাগরিকদের অধিকারে সরকারের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করা এ বিক্ষোভকে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই আন্দোলন দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ১,২০০-এর বেশি স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় ১৫০টিরও বেশি সংগঠন, যার মধ্যে ছিল নাগরিক অধিকার সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন, এলজিবিটিকিউ প্লাস অধিকারকর্মী, অভিবাসী অধিকারকর্মী, প্রবীণ ও নির্বাচনকেন্দ্রিক আন্দোলনের নেতারা। কোথাও কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
নিউ ইয়র্ক সিটির মিডটাউন থেকে শুরু করে আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজ পর্যন্ত বিস্তৃত এই আন্দোলনে অংশ নেয়া মানুষ ট্রাম্প ও মাস্কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, সরকারি কর্মী ছাঁটাই, অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে প্রশাসন। সিয়াটলের আইকনিক স্পেস নিডলের নিচে বিক্ষোভকারীরা ‘ফাইট দ্য অলিগার্কি’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন। পোর্টল্যান্ড ও লস অ্যাঞ্জেলেসে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে, যেখানে পারশিং স্কয়ার থেকে সিটি হল পর্যন্ত মিছিল করেন তারা।
ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলে অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ক্যাম্পেইনের প্রেসিডেন্ট কেলি রবিনসন বলেন, এই আক্রমণগুলো শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, এগুলো ব্যক্তিগতও। ওরা আমাদের বই নিষিদ্ধ করছে, এইচআইভি প্রতিরোধ প্রকল্পে কাটছাঁট করছে, আমাদের ডাক্তার, শিক্ষক, পরিবার আর জীবনকে অপরাধে পরিণত করছে। তিনি আরো বলেন, এই আমেরিকা আমরা চাই না। আমরা এমন একটি আমেরিকা চাই, যেখানে মর্যাদা, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা কেবল কিছু মানুষের জন্য নয়, আমাদের সবার জন্য থাকবে।
বোস্টনে বিক্ষোভকারীরা ‘হ্যান্ডস অফ আওয়ার ডেমোক্রেসি’ এবং ‘হ্যান্ডস অব আওয়ার সোশ্যাল সিকিউরিটি’ লেখা ব্যানার বহন করেন। বোস্টনের মেয়র মিশেল উ বলেন, আমি মেনে নিতে পারি না যে আমার সন্তানেরা এমন একটি দেশে বড় হবে, যেখানে তাদের দাদু-দাদীকে কেবল অভিবাসী হওয়ার কারণে অপরাধী হিসেবে দেখা হবে। ওহাইওর ডেলাওয়্যার কাউন্টির ৬৬ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত রজার ব্রুম বলেন, আমি একসময় রিগ্যানপন্থী রিপাবলিকান ছিলাম। কিন্তু ট্রাম্প আমাকে রাজনীতি থেকে বিমুখ করে দিয়েছে। এই প্রশাসনটা কেবল অভিযোগ আর প্রতিহিংসার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ওরা এই দেশটা ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে।
ফ্লোরিডার পাম বিচ গার্ডেনসে শত শত মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়। ট্রাম্প যখন কাছাকাছি একটি গলফ ক্লাবে দিন কাটাচ্ছিলেন, তখন মানুষ তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে সড়কে জড়ো হয়। পোর্ট সেন্ট লুসির বাসিন্দা আর্চার মোরান বলেন, ওদের বলো—আমাদের সোশ্যাল সিকিউরিটির ওপর হাত দিও না। এটা আমাদের অধিকার, ওদের খেলনা নয়। এদিকে, হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান পরিষ্কার— তিনি সবসময় উপযুক্ত নাগরিকদের জন্য সোশ্যাল সিকিউরিটি, মেডিকেয়ার ও মেডিকেইড রক্ষা করবেন। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটদের নীতি হচ্ছে অবৈধ অভিবাসীদের এসব সুবিধা দিয়ে এই সব প্রোগ্রাম ধ্বংস করা।
বিক্ষোভকারীরা অবশ্য এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলছেন, সরকারের এই সংকোচনমূলক নীতি সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনধারায় আঘাত হানছে। এই বিক্ষোভ স্পষ্ট করে দিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। তবে, ভবিষ্যতে এই আন্দোলন রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে কতটা এগোবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
খবর এপি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us