সম্প্রতি পানামা খালে সিকে হাচিসন হোল্ডিংসের দুটি বন্দর মার্কিন বিনিয়োগ সংস্থা ব্ল্যাকরকের কাছে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বিষয়টির কড়া সমালোচনা করেছে চীন। চীনের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট— তারা বিষয়টি ওপর কড়া নজর রাখছে, এবং একই সঙ্গে তারা এতে সন্তুষ্ট নয়। আগে হাচিসন বন্দর চুক্তিকে দেখা হতো ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার সমাধান হিসেবে। তবে এখন এটি নিয়েই উত্তেজনার শুরু। চীনের হংকং বিষয়ক কার্যালয় বন্দর বিক্রির বিষয়ে সিকে হাচিসনকে সতর্ক থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। একই সঙ্গে তারা হাচিসনের এ উদ্যোগকে যে ভালোভাবে নেয়নি তাও জানিয়ে দিয়েছে। বেইজিংপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলোতেও এই উদ্যোগের সমালোচনা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মার্কিনীদের কাছে বন্দর বিক্রির সিদ্ধান্ত সিকে হাচিসনের মেরুদণ্ডহীনতারই বহিঃপ্রকাশ। তাছাড়া এই উদ্যোগ স্থানীয় ভূ-রাজনীতির জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে বেশকিছু দিন ধরেই চীনা মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে উত্তেজনা চলছে। দেশটিতে এ মুহূর্তে টিকটক ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে কিনা বা দেশটিতে এর ভবিষ্যৎ কী হবে এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও দপ্তর। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সামনে এ টিকটকের একাংশের মালিকানা হয়তো মার্কিনদের কাছে বিক্রি করা হতে পারে। এরই মধ্যে পানামা খালের দুটি বন্দর মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির সমালোচনা করায় ধারণা করা হচ্ছে, সামনে যখন চীন টিকটকের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করতে যাবে, তখন তাদের জন্য যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আরো কঠিন হতে পারে। বিষয়টি দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও কর্পোরেট কৌশলের মধ্যে ভারসাম্য কমিয়ে দিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, হাচিসনের বন্দর ও টিকটক—এই দুটির সঙ্গেই উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবসহ উচ্চ স্তরের লেনদেন জড়িত। টিকটকের ক্ষেত্রে, মার্কিন সরকার জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের এই অ্যাপটি সে দেশে চালানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতার কাছে টিকটকের মার্কিন কার্যক্রমের অংশটুকু বিক্রি করার সম্ভাবনাকে দেখা হচ্ছে সাম্প্রতিক স্মৃতির মধ্যে থাকা সবেচয়ে জটিল ব্যবসায়িক চুক্তি হিসেবে। এই বেচাকেনার সঙ্গে টেসলার সিইও এলন মাস্ক, ওরাকলের চেয়ারম্যান ল্যারি এলিসনের মতো ব্যক্তিরাও জড়িত। ফলে সম্প্রতি চীন বন্দর বিক্রির বিষয়ে যেভাবে সমালোচনা করছে, তা ইঙ্গিত দিচ্ছে সামনে টিকটকের মালিকানা বিক্রি করা নিয়ে তাদের বেশ ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন