MENU
 বিদায় স্কাইপ: দুই দশক পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মাইক্রোসফটের কলিং প্ল্যাটফর্ম – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন

বিদায় স্কাইপ: দুই দশক পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মাইক্রোসফটের কলিং প্ল্যাটফর্ম

  • ০১/০৩/২০২৫

একসময় স্কাইপের নাম এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে মানুষ ‘স্কাইপ করা’ কথাটিকে ‘গুগল করার’ মতোই স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করত।
চলতি বছরের মে মাসে বাজবে স্কাইপের বিদায় ঘন্টা। দুই দশক ধরে সীমান্ত পেরিয়ে মানুষকে সংযুক্ত করে আসা এই ইন্টারনেট কলিং সার্ভিস আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দিচ্ছে মাইক্রোসফট।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, স্কাইপ বন্ধের মূল কারণ হলো কোম্পানির যোগাযোগ সেবাগুলোকে সহজ করা এবং তাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ‘টিমস’-এর ওপর বেশি মনোযোগ দেওয়া।
২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কাইপ প্রথমদিকে টেলিফোন ও ল্যান্ডলাইন ইন্ডাস্ট্রিতে বড়সড় ধাক্কা দেয়। অডিও ও ভিডিও কলের সুবিধা এনে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর মন জয় করে নেয় এটি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জুম, স্ল্যাক, ফেসটাইম-এর মতো সহজ এবং আরও নির্ভরযোগ্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি স্কাইপ। এর প্রযুক্তিও ধীরে ধীরে স্মার্টফোন-যুগের উপযোগী হতে পারেনি।
বিশেষ করে মহামারির সময় যখন অনলাইন মিটিং ও ভিডিও কনফারেন্সের চাহিদা গগনচুম্বী হয়, তখন মাইক্রোসফট স্কাইপের বদলে টিমসকে বেশি গুরুত্ব দেয়। অফিস ও কর্পোরেট গ্রাহকদের টার্গেট করে মাইক্রোসফট টিমসকে অফিস অ্যাপগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে।
একসময় স্কাইপের নাম এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে মানুষ ‘স্কাইপ করা’ কথাটিকে ‘গুগল করার’ মতোই স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফেসটাইম, জুম ও গুগল মিট-এর মতো সেবাগুলো স্কাইপের জায়গা দখল করে নেয়।
২০১১ সালে গুগল ও ফেসবুককে পেছনে ফেলে মাইক্রোসফট ৮.৫ বিলিয়ন ডলারে স্কাইপ কিনে নেয়। তখন এ প্ল্যাটফর্মের মাসিক ব্যবহারকারী ছিল প্রায় ১৫০ মিলিয়ন, যা ২০২০ সালে কমে মাত্র ২৩ মিলিয়নে নেমে আসে।
বছরের পর বছর ধরে মাইক্রোসফট স্কাইপকে তাদের অন্যান্য সফটওয়্যারের সঙ্গে একীভূত করতে ব্যর্থ হয়। আর অ্যাপলের ফেসটাইমসহ গুগলের বিভিন্ন যোগাযোগ অ্যাপের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পর স্কাইপের অবস্থান দুর্বল হতে থাকে।
২০১৭ সালে মাইক্রোসফট যখন টিমস চালু করে, তখন থেকেই এটি তাদের মূল অগ্রাধিকার হয়ে ওঠে। এরপর থেকে স্কাইপ ক্রমেই গুরুত্ব হারাতে থাকে।
শুক্রবার, মাইক্রোসফট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই যাত্রা অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। স্কাইপ আধুনিক যোগাযোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিল।’
স্কাইপ বন্ধ হওয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য টিমসের ফ্রি সংস্করণ থাকবে। স্কাইপে থাকা আগের ইউজার নেম-পাসওয়ার্ড দিয়েই তারা টিমসের ওই সংস্করণ ব্যবহার করতে পারবেন। সেখানে তাদের পুরোনো চ্যাট ও কন্টাক্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থানান্তরিত হবে।
স্কাইপ যে এতদিন চালু ছিল, সেটাই অবশ্য অনেকের কাছে অবাক করার মতো খবর হতে পারে। কারণ মাইক্রোসফট বেশ কয়েক বছর ধরেই স্কাইপকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না।
বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সফল যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করা যে চ্যালেঞ্জিং, গুগলের ব্যর্থতাই তার বড় প্রমাণ। এখন স্কাইপও ডুয়ো ও এওএল ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার-এর মতো পরিত্যক্ত যোগাযোগ অ্যাপের দলে নাম লেখাল।
মাইক্রোসফট স্কাইপের বর্তমান ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রকাশ করেনি। তবে কোম্পানিটি নিশ্চিত করেছে, এই পরিবর্তনের ফলে কোনো কর্মী ছাঁটাই করা হবে না। বর্তমানে টিমসের মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩২০ মিলিয়নেরও বেশি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us