ইউরোপে সমুদ্রপথে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি গত বছর উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ইউরোপে সমুদ্রপথে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি গত বছর উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২১ সালের পর এটি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) জানিয়েছে, গত বছর ইউরোপে এলএনজি আমদানি ১৯ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৪৭ শতাংশ কমেছে।
সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, ইউরোপে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়লেও এলএনজি টার্মিনালে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় ইউরোপ এলএনজি অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এ অবকাঠামোর অনেকাংশ অব্যবহৃত থাকার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
আইইইএফএর প্রধান বিশ্লেষক আনা মারিয়া জাল্লার-মাকারেভিচ বলেন, ‘একদিকে গ্যাসের চাহিদা কমছে, অন্যদিকে নতুন বিনিয়োগ বাড়ছে। ভবিষ্যতে এগুলোর অনেক কিছুই অব্যবহৃত থাকতে পারে।’
যুক্তরাজ্যে গ্যাসের চাহিদাও ঐতিহাসিকভাবে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। আইইইএফএ জানিয়েছে, ইউরোপজুড়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমছে।
ইউরোপের গ্যাস চাহিদা কমলেও ২০২১-৩০ সালের মধ্যে এলএনজি আমদানি সক্ষমতা ৬০ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ার মতো দেশগুলো নতুন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করছে।
রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি আমদানি বাড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও গত বছর রুশ এলএনজি আমদানি ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
আইইইএফএর একটি গবেষণার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইউরোপে আমদানি করা রুশ এলএনজির এক-তৃতীয়াংশ স্বল্পমেয়াদি বাজার থেকে কেনা হয়েছে। এর মানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় না পড়া এসব আমদানির ওপর দ্রুত নিয়ন্ত্রণ আনার প্রয়োজন রয়েছে।
আইইইএফএ আরো জানিয়েছে, এলএনজি কমার অন্যতম কারণ হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার। তবে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আমদানি কিছুটা বেড়েছে। এলএনজির এ বাড়তি আমদানি মোট গ্যাসের চাহিদাকে স্থিতিশীল রেখেছে।
জাল্লার-মাকারেভিচ আরো জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গ্যাসের চাহিদা কমানোর চেষ্টায় অগ্রগতি করেছে। এতে জ্বালানি নিরাপত্তা কিছুটা হলেও নিশ্চিত হয়েছে। তবে গত বছর ইইউর গ্যাসের চাহিদা একই ছিল। তাই জ্বালানির উৎস আরো বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে এলএনজি বাজারের অনিশ্চয়তা কমাতে ইউরোপকে আরো শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন