MENU
 অপরাধীদের লক্ষ্য অ্যাপ ও কিউআর কোড ডিজিটাল পেমেন্টের সঙ্গে বাড়ছে প্রতারণার ঝুঁকি – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১২ অপরাহ্ন

অপরাধীদের লক্ষ্য অ্যাপ ও কিউআর কোড ডিজিটাল পেমেন্টের সঙ্গে বাড়ছে প্রতারণার ঝুঁকি

  • ২৪/০২/২০২৫

ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ লেনদেন, কিউআর কোড দিয়ে পেমেন্ট ও ‘এখন কিনুন, পরে পরিশোধ করুন’ পরিষেবার ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার ঘটনাও বাড়ছে।

ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ লেনদেন, কিউআর কোড দিয়ে পেমেন্ট ও ‘এখন কিনুন, পরে পরিশোধ করুন’ পরিষেবার ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার ঘটনাও বাড়ছে। এসব সুবিধাজনক লেনদেন পদ্ধতির প্রতি নির্ভরতা বাড়ার ফলে প্রতারকরা নতুন উপায়ে অর্থ ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার সুযোগ পাচ্ছে। তথ্যভিত্তিক নিরাপত্তা পরিষেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘লেক্সিসনেক্সিস রিস্ক সলিউশনের’ সম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

লেন-সেলার্স সতর্ক করে জানান, সাধারণ স্ক্যাম বা প্রতারণা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকলেও ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপ ও ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার বিশ্বজুড়ে আর্থিক প্রতারণার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতারকরা এখন বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি উদ্বেগজনক।

তার মতে, যারা নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে কম জানে বা সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন নয়, তারা সহজেই এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণকারী বা ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে আর্থিক সেবা প্রদানকারী যেকোনো সংস্থাই এ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়লেও এর নিরাপত্তা ঝুঁকি সমানভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে আর্থিক সেবা খাতে, যেখানে এ প্লাটফর্মের ব্যবহার প্রতারকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে। লেন-সেলার্সের মতে, বৈশ্বিক এ প্রবণতা মোকাবেলায় সব দেশ ও সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ব্যবহারকারীর সচেতনতা ও নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ একসঙ্গে নেয়া জরুরি।’

প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, মোবাইল অ্যাপের সহজ ব্যবহার ও নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন প্রক্রিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের ‘ভুল’ নিরাপত্তাবোধ তৈরি করতে পারে।

যেকোনো লেনদেনের সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে লেন-সেলার্স বলেন, ‘ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে যেকোনো আর্থিক কার্যক্রম সম্পাদনের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য। প্রতারকরা প্রায়ই এ ধরনের সুযোগের অপেক্ষায় থাকে এবং ছোট একটি ভুলের সুযোগ নিয়ে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এর মধ্যে অর্থ লেনদেন, অ্যাকাউন্ট খোলা, অ্যাকাউন্টের যোগাযোগের তথ্য পরিবর্তন করা এবং অন্যান্য কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত।’

ইন্টারনেটের বিস্তার ও বিভিন্ন সুবিধার কারণে মানুষ অনলাইনে কেনাকাটার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। অনলাইন রিসোর্স ও ডাটা বিশ্লেষণ প্লাটফর্ম ডিমান্ডসেইজ বলছে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী অনলাইনে কেনাকাটা করেছেন ২৭১ কোটি মানুষ, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার বিচারে ৩৩ শতাংশ। অনলাইন শপিংয়ের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রবণতাও বেড়েছে। স্ট্যাটিস্টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর ডিজিটাল পেমেন্ট বাজারে মোট লেনদেনের মূল্য ২০ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন বা ২০ লাখ ৩৭ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে। এ সময় সর্বোচ্চ স্থানে থাকবে চীন।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার দিয়ে যেকোনো সময় ও জায়গায় দ্রুত লেনদেনের সুবিধা, ‘পেমেন্ট হিস্ট্রি’ অপশন, অ্যাপে ক্রেডিট স্কোর, পুরস্কার পয়েন্ট ও নানা ডিসকাউন্ট ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থ পরিশোধে আরো আগ্রহী করে তুলছে।

লেন-সেলার্সের মতো অন্য বিশেষজ্ঞরাও ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বোস্টন ইউনিভার্সিটির কুয়েস্ট্রম স্কুল অব বিজনেসের মার্কেটস, পাবলিক পলিসি ও আইনের অধ্যাপক জে জাগোরস্কি বলেছেন, ‘একটি ক্যাশলেস (নগদ অর্থহীন) সমাজে আর্থিক সুরক্ষার মাত্রা কমে যায়। কারণ শত্রুরা ব্যাংকিং সিস্টেম বা ওয়্যার ট্রান্সফার সিস্টেম হ্যাক করেই কোনো বস্তুগত হামলা ছাড়াই অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।’

প্রতিষ্ঠানটির জালিয়াতি ও পরিচয়বিষয়ক পরিচালক জেসন লেন-সেলার্স বলেন, ‘মোবাইল পেমেন্ট অ্যাপস ও কিউআর কোড এখন অপরাধমূলক কার্যক্রমের নতুন লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে। অপরাধীরা বিষাক্ত ধোঁয়ার মতো, তারা অতি ক্ষুদ্র ফাঁকফোকর দিয়েও প্রবেশ করতে পারে।’ খবর :দ্য ন্যাশনাল নিউজ।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us