ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর আরও পড়েছে। প্রতি ডলারের বিপরীতে এখন পাওয়া যাচ্ছে ৮৬ দশমিক ২০ রুপি। অর্থাৎ ভারতীয় রুপির দর এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে। গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষায় বলা হয়, রুপি আরও দুর্বল হয়ে ডলারের বিপরীতে ৮৬-তে নেমে যেতে পারে। মাত্র ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। শুক্রবার ১৪ পয়সা পতন হয়েছে রুপির।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ভারতের পুঁজিবাজার মহাসংকটে পড়েছে। রুপির এই দরপতনের পাশাপাশি শেয়ারবাজারেরও পতন হচ্ছে লাগাতার। শুক্রবার সেনসেক্স ২৪১ দশমিক ২০ পয়েন্ট পড়ে ৭৬ হাজারের দোরগোড়ায় চলে এসেছে; ৭৭ হাজার ৩৭৮ দশমিক ৯১ অঙ্কে গিয়ে নেমেছে। গত তিন দিনে সূচকটি পড়েছে মোট ৮২০ পয়েন্ট। বাজারের মূলধন কমেছে ১২ লাখ কোটি রুপি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মোট ১২ হাজার ৭৮৭ দশমিক ৭৩ কোটি রুপি পুঁজি তুলে নিয়েছে। সেটাই রুপির অবমূল্যায়নের অন্যতম কারণ।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এভাবে শেয়ার বিক্রি নিয়ে শুক্রবার মোদি সরকারের সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, হিসাব অনুযায়ী নতুন বছরের প্রথম কয়েক দিনেই শেয়ারবাজার থেকে ২০০ কোটি ডলারের পুঁজি তুলে নিয়েছে ওই সব বিদেশি ঋণদানকারী সংস্থাগুলো। ফলে সূচক আরও নিচে নেমেছে।
শুক্রবার শেষ হওয়া সপ্তাহে সেনসেক্সের নিট পতন হয়েছে ১ হাজার ৮৪৪ দশমিক ২ পয়েন্ট, নিফটির ৫৭৩ দশমিক ২৫। আপাতত রুপি ও শেয়ারবাজার—উভয়ই অস্থির থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সাধারণ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতি তাঁদের পরামর্শ, আপাতত শেয়ার কেনা বন্ধ রাখাই ভালো। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বাড়ছে এবং বন্ডের বিপরীতে অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দর কমছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংকের উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা হয়েছে, শেষ প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩০ কোটি ডলার। এর আগের প্রান্তিকে ভারতে ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল। এসব কারণে রুপির ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
খবর : ইকোনমিক টাইমস।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন