পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে কন্টেইনার পণ্য নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে জাহাজ এমভি ইউয়ান জিয়াং ফা ঝং। জাহাজটিতে এবার পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি এসেছে পরিশোধিত চিনি ও খনিজ পদার্থ ডলোমাইট। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) জাহাজটি বন্দরে পৌঁছায়।
সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে এবার সবচেয়ে বেশি এসেছে পরিশোধিত চিনি। মোট ২৮৫ কন্টেইনারে ১ লাখ ৪৮,২০০ ব্যাগ চিনি আনা হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টন। এই চিনি এনেছে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পগ্রুপ প্রাণ–আরএফএল, শেহজাদ ফুড প্রোডাক্টস, সেভয় আইসক্রিম কারখানা ও ব্রডওয়ে ইন্টারন্যাশনাল।
চিনির পর পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে ডলোমাইট। ডলোমাইট আমদানি হয়েছে ১৭১ কন্টেইনারে। কাচশিল্পে ব্যবহারের জন্য এই কাঁচামাল এনেছে নাসির ফ্লোট গ্লাস ও আকিজ গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ। পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া আরেকটি পণ্য হলো সোডা অ্যাশ। এই পণ্য আমদানি হয়েছে ১৩৮ কন্টেইনারে। শিল্পে ব্যবহারের এই কাঁচামাল এনেছে নাসির ফ্লোট গ্লাসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলো এনেছে কাপড়ের রোল। মোট ৪৬টি কন্টেইনারে রয়েছে কাপড়ের রোল। আলু আমদানি হয়েছে ১৮ একক কন্টেইনারে। এর পাশাপাশি জয়পুরহাটের পিঅ্যান্ডপি ট্রেডিং ২০ কন্টেইনারে আখের গুড় এনেছে। এসব পণ্যের পাশাপাশি পুরোনো লোহার টুকরা, রেজিন, থ্রি–পিস ইত্যাদি পণ্য আমদানি হয়েছে।
পাকিস্তান ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পণ্য আনা হয়েছে জাহাজটিতে। আমিরাত থেকে আনা হয়েছে খাদ্যপণ্য, খেজুর, লুব অয়েল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। পাকিস্তানের পাশাপাশি আমিরাত থেকেও ১০ কন্টেইনার চিনি আমদানি হয়েছে। জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে এতদিন শ্রীলঙ্কা বা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রামে পণ্য আমদানি হতো। তাতে এক কন্টেইনার একবার এসব বন্দরে নামানো হতো। আবার চট্টগ্রামমুখী জাহাজে তুলে দেওয়া হতো। এতে সময় লাগত বেশি। এখন সরাসরি জাহাজসেবা চালুর কারণে ১০ দিনে পণ্য হাতে পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
“এমভি ইউয়ান জিয়াং ফা ঝং” জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে রিজেনসি লাইনস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আনিস উদ দৌলা প্রথম আলোকে বলেন, “সরাসরি জাহাজসেবায় রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত কাঁচামাল হাতে পাচ্ছে। এ কারণে এই সেবায় কন্টেইনার পরিবহনের হার বাড়ছে।”
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের করাচি বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রামের সরাসরি কন্টেইনার জাহাজ যোগাযোগ চালু হয়েছিল গত নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। প্রথমবার ৩৭০ একক কন্টেইনার আনা হয় জাহাজটিতে করে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আনা হয় ২৯৭ একক কন্টেইনার, বাকিগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। এবার আমিরাত ও পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে ৮১১ একক কন্টেইনার পণ্য, যার মধ্যে ৮৬% পাকিস্তানের।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন