অলাভজনক ও দাতব্য খাতে অগ্রসর অতিধনী নারীরা – The Finance BD
 ঢাকা     সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

অলাভজনক ও দাতব্য খাতে অগ্রসর অতিধনী নারীরা

  • ০২/১২/২০২৪

ধীরে ধীরে বৈশ্বিক ধনী শ্রেণীর বড় একটি অংশ হয়ে উঠছেন নারীরা। তারা বিলিয়নেয়ার ক্লাবের সংস্কৃতি রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।
ধীরে ধীরে বৈশ্বিক ধনী শ্রেণীর বড় একটি অংশ হয়ে উঠছেন নারীরা। তারা বিলিয়নেয়ার ক্লাবের সংস্কৃতি রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে অলাভজনক ও দাতব্য কাজে তারা অগ্রসর অবস্থানে রয়েছেন। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজেদের সম্পদের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন লক্ষ্য অর্জন ও দাতব্য কাজে মনোযোগ দিচ্ছেন তারা।
আলট্রাটা বিলিয়নেয়ার সেনসাসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বে মোট বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ৩ হাজার ৩২৩, এর মধ্যে ১৩ শতাংশ অর্থাৎ ৪৩১ জন নারী। মোটের হিসাবে সংখ্যাটি ছোট মনে হলেও এর তাৎপর্য অনেক। কারণ গত এক দশকে অতিধনী নারীর সংখ্যা ও সম্পদে তাদের হিস্যা ধীরে ধীরে বেড়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক মনোভাবের পরিবর্তন এবং উল্লেখযোগ্য আন্তঃপ্রজন্ম সম্পদ হস্তান্তরের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বিলিয়নেয়ারের তালিকায় নারীদের সংখ্যা বাড়াচ্ছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ৪৩১ জন নারী বিলিয়নেয়ারের তিন-চতুর্থাংশ সম্পদের একটি অংশ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। তাদের ৩৮ শতাংশই সব সম্পদ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। এর মধ্যে বিশ্বের তিনজন শীর্ষ ধনী নারী আছেন বলে জানিয়েছে আলট্রাটা। তারা হলেন অ্যালিস ওয়ালটন, জুলিয়া ফ্লেশার কচ ও পরিবার এবং ফ্রান্সোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ারস। যথাক্রমে ১০ হাজার ৪০০ কোটি, ৭ হাজার ৬০০ কোটি ও ৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের উত্তরাধিকার সম্পদ হিসেবে পেয়েছেন তারা। সে তুলনায় ৫ শতাংশ পুরুষ বিলিয়নেয়ার তাদের সম্পদ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। এছাড়া এক-চতুর্থাংশ অতিধনী নারী নিজের প্রচেষ্টায় সম্পদ অর্জন করেছেন, পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার ৬৬ শতাংশ।
আর্থিক খাতের গবেষণা ও পরামর্শক সংস্থা সেরুলি অ্যাসোসিয়েটসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীরা আগামী দশকে গ্রেট ওয়েলথ ট্রান্সফারের অংশ হিসেবে ৩০ ট্রিলিয়ন ডলার উত্তরাধিকার পেতে পারেন।
অতিধনী পুরুষ ও নারীদের দাতব্যও ব্যয়ের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে, এমন চিত্রও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হচ্ছে, নারীরা অলাভজনক ও সামাজিক সংগঠনের ওপর বেশি মনোযোগ দেন। প্রায় প্রতি পাঁচজন নারী বিলিয়নেয়ারের একজন পেশাগত সময়ের বেশির ভাগ অলাভজনক কাজে ব্যয় করেন, পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার ৫ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুসারে, নারীদের সম্পদ অর্জনে উত্তরাধিকারের প্রাধান্যের কারণেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কারণ তারা বাণিজ্যিক কাজে তেমন একটা যুক্ত থাকেন না।
এছাড়া মূল্যবোধের দিক থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের সঙ্গে দানশীলতা, কল্যাণ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। নারী বিলিয়নেয়ারদের আর্থিক পোর্টফোলিও পুরুষের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। প্রাইভেট কোম্পানিতে তাদের সম্পদ বেশি। অতিধনী নারীদের ক্ষেত্রে এ হার ৩৫ ও পুরুষের ২৮ শতাংশ। নারী বিলিয়নেয়ারদের নগদ অর্থ ও তারল্য পুরুষের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে পুরুষ বিলিয়নেয়াররা অনেক বেশি স্টক ধারণ করেন। পুরুষের সম্পদের ৪০ শতাংশই স্টকে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে এটি ২২ শতাংশ।
নারী বিলিয়নেয়াররা পুরুষের তুলনায় বিলাসী জীবনযাপন করেন। তারা বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট ও শিল্পকলা সংগ্রহে বেশি আগ্রহী। উদাহরণস্বরূপ, তাদের ১০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের রিয়েল এস্টেটের মালিক হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষের তুলনায় দেড় গুণ বেশি।
অন্যদিকে পুরুষ বিলিয়নেয়াররা ব্যক্তিগত জেট, ইয়ট ও দামি গাড়ি কিনতে বেশি আগ্রহী। পুরুষ বিলিয়নেয়াররা নারীদের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ গুণ বেশি ১০ লাখ ডলারের বেশি দামের গাড়ির মালিক হওয়ার সম্ভাবনা রাখেন। পাশাপাশি তাদের ইয়টের মালিক হওয়ার সম্ভাবনাও দ্বিগুণেরও বেশি।
শৌখিন দ্রব্য কেনাকাটায় এ লিঙ্গ বিভাজন আরো বেশি স্পষ্ট। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, নারী বিলিয়নেয়ারদের ক্ষেত্রে দানশীলতা ছিল সর্বাধিক উল্লেখিত শখ, যা ৭১ শতাংশ। পুরুষদের জন্য শীর্ষ শখ ছিল খেলা, ৭১ শতাংশ। এছাড়া অতিধনী নারীরা শিল্পকলা, শিক্ষা ও ভ্রমণকে শখ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে পুরুষরা উড়োজাহাজ চালনা, আউটডোর কার্যক্রম ও রাজনীতিতে বেশি আগ্রহী।
খবর সিএনবিসি।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us