বৈশ্বিক ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজারের আকার আগামী কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। ২০২৮ সালের মধ্যে এ বাজার ৫ হাজার ৪৬৫ কোটি ডলারে পৌঁছবে, যেখানে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হবে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। বাজার গবেষণা সং¯’া ‘বিজনেস রিসার্চ কোম্পানির’ সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ইআইএন প্রেসওয়্যার।
সংটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ফোল্ডেবলের বাজার ২০২৩ সালে ২ হাজার ৬৯ কোটি থেকে ২০২৪ সালে ২ হাজার ৫১০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। এ বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে বার্ষিক ২১ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হার। প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ফোল্ডেবল স্মার্টফোন দ্রুত জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণ ছোট ডিভাইসে বড় পর্দা, হিঞ্জ মেকানিজমের (স্ক্রিন ফোল্ড করতে সাহায্য করে যে অংশ) অগ্রগতি, ফাইভজি নেটওয়ার্কের বিস্তার ও গবেষণা এবং উন্নয়নে বেশি বিনিয়োগ।
বিজনেস রিসার্চ বলছে, ২০২৪ সালের পর ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজার ব্যাপকভাবে বাড়বে। ২০২৮ সালের মধ্যে এটি ৫ হাজার ৪৬৫ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে। এ সাফল্যের পেছনে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে সংস্থাটির, যেমন রিমোট ও হাইব্রিড কাজ (হতে পারে বাসায় থেকে কাজ), পরিবর্তিত চাহিদার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো মোবাইল প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার, ফাইভজি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত ক্লাউড অ্যাকসেস ও ব্যবসার ক্ষেত্রে ডাটা বিশ্লেষণে বাড়তি গুরুত্ব।
এছাড়া গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষকরা বলছেন, কোম্পানিগুলো পূর্বাভাসের সময়ে ব্যবহারকারীর ডাটা সুরক্ষা ও ব্যবহারের আইনি নিয়ম অনুসরণের প্রতি আরো বেশি গুরুত্ব দেবে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপত্তার জন্য একাধিক ক্লাউড সেবা ব্যবহার করবে। রিমোট কাজ বাড়ানোর সঙ্গে অনলাইনে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আরো উন্নত টুলস ব্যবহার হবে এবং স্বা¯’্য খাত বা আর্থিক খাতের মতো নির্দিষ্ট শিল্পের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ক্লাউড সেবা তৈরি হবে।
প্রতিবেদন বলছে, ফোল্ডেবলের বাজার বাড়ার প্রধান কারণ হলো মোবাইল গেমস। গত কয়েক বছর সার্বিকভাবে স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়েছে এবং ইন্টারনেট সংযোগসহ মোবাইল গেমিং প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। গেমাররাও বিশেষ করে অ্যাকশন গেম খেলার সময় ফোল্ডেবল ডিভাইসকে বেশি প্রাধান্য দেন। বিজনেস রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে ইউরোপের গেমিং শিল্প ২ হাজার ৪৫০ কোট ডলার আয় করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে মোবাইল গেমিংয়ের অবদান ছিল ৪২ শতাংশ।
এদিকে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের বাজারে বড় কোম্পানিগুলো নতুন প্রযুক্তি, যেমন ট্রাই-ফোল্ড ডিজাইনের দিকে অগ্রসর হ”েছ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে চীনের হুয়াওয়ে মেট এক্সটি আল্টিমেট এডিশন নামে বিশ্বের প্রথম ট্রাই-ফোল্ড স্মার্টফোন লঞ্চ করে। এতে ১০ দশমিক ২ ইঞ্চির ফোল্ডেবল ওলেড স্ক্রিন রয়েছে, যা ৬ দশমিক ৪ ইঞ্চির ফোন থেকে ১০ ইঞ্চির ট্যাবলেটে রূপান্তর হতে পারে। এরপর গুঞ্জন ওঠে যে স্যামসাংও ট্রাই-ফোল্ডের প্রতিযোগিতায় নামছে। আবার দীর্ঘদিন ধরেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় আলোচনা চলে আসছিল, টেক জায়ান্ট অ্যাপল ফোল্ডেবল আইফোন নিয়ে কাজ করছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রযুক্তিভিত্তিক পাবলিকেশন কোম্পানি দি ইনফরমেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভবত ২০২৬ সালে যত দ্রুত সম্ভব ফোল্ডেবল আইফোন উন্মোচন করা হবে। যদিও স্যামসাং কিংবা অ্যাপলের পক্ষ থেকে সব তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন