আন্তর্জাতিক বাজারে শুক্রবার স্বর্ণের দাম প্রথমবারের মতো আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৭০০ ডলারের সীমা অতিক্রম করেছে। ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীনসহ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে নিম্নমুখী হয়েছে মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা। এদিকে দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ ভারতের স্থানীয় বাজারেও স্বর্ণের দাম আবার বেড়েছে। দেশটিতে শুক্রবার মূল্যবান ধাতুটির দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৭৭ হাজার ২২০ রুপিতে পৌঁছে, এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৭৩ হাজার ৩০০ রুপি।
মুম্বাইভিত্তিক পাইকারি স্বর্ণ ব্যবসায়ী চেনাজি নারসিংহজির মালিক অশোক জৈন বলেন, ‘গত সপ্তাহে একটি উল্লেখযোগ্য মূল্য হ্রাসের কারণে গহনার চাহিদা বেড়েছিল। তবে চলতি সপ্তাহে দাম বাড়ায় ধাতুটির চাহিদা আবার কমেছে।’ বাড়তি দামের কারণে খুচরা ক্রেতা ও গহনা ব্যবসায়ীদের কাছে কম চাহিদার কারণে পণ্যটির সংযোজিত মূল্যও হ্রাস পেয়েছে। চলতি সপ্তাহে ভারতীয় ডিলাররা সরকার নির্ধারিত স্থানীয় দামের সঙ্গে আউন্সপ্রতি ৩ ডলার পর্যন্ত মূল্য সংযোজন করেছেন, গত সপ্তাহে যা ছিল আউন্সপ্রতি ১৬ ডলার। উল্লেখ্য, এ সংযোজিত মূল্যের সঙ্গে ৬ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ৩ শতাংশ বিক্রয় শুল্ক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মুম্বাইভিত্তিক একটি প্রাইভেট বুলিয়ন আমদানি ব্যাংকের ডিলার বলেন, ‘বিশ্ববাজারে আবার স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি ও ডলারের বিপরীতে রুপির বিনিময় হার রেকর্ড কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণভাবে বেড়েছে স্বর্ণের দাম। এ কারণে ব্যবসায়ীসহ খুচরা ক্রেতারা দাম কমার অপেক্ষায় আছেন।’ এদিকে চীনে চলতি সপ্তাহে স্বর্ণের সংযোজিত মূল্যের পরিমাণ ছিল আউন্সপ্রতি ১০ ডলার। এছাড়া দেশটির ব্যবসায়ীরা এ সময় ৬ ডলার পর্যন্ত ছাড়ে মূল্যবান ধাতুটি বেচাকেনা করেছেন।
জাপানে চলতি সপ্তাহে ৫০ সেন্ট প্রিমিয়ামে স্বর্ণ বেচাকেনা হয়েছে, যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত। এ সময় সিঙ্গাপুরে স্বর্ণের সংযোজিত মূল্য ছিল আউন্সপ্রতি ১ ডলার ২০ সেন্ট থেকে ২ ডলার ২০ সেন্ট পর্যন্ত। স্পট মার্কেটে শুক্রবার স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য পৌঁছেছে ২ হাজার ৭০৯ ডলার ২৪ সেন্টে, যা গত ৬ নভেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ২ হাজার ৭১২ ডলার ২০ সেন্টে।
অ্যালিজিয়েন্স গোল্ডের চিফ অপারেটিং অফিসার অ্যালেক্স এবকারিয়ান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখন রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে নিরাপদ বিনিয়োগের আশ্রয় খাত হিসেবে বাড়ছে স্বর্ণের চাহিদা। এতে প্রভাব পড়ছে দামে।’
খবর : রয়টার্স।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন