ক্রিপ্টো ট্রেডিং ফার্ম বাকট কেনার বিষয়ে আলোচনা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি, এমন খবরে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে। এরপর প্রথমবারের মতো ৯৪ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে বিটকয়েনের দাম। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাকট বিক্রির খবরটি ক্রিপ্টোকারেন্সিবান্ধব নীতিমালার আশায় বাজারে নতুন উদ্দীপনা যোগ করেছে।
চলতি বছরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের মূল্য দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। গতকাল এশিয়ার সময় অনুযায়ী সকালে বিটকয়েনের দাম ছিল ৯২ হাজার ১০৪ ডলার এবং আগের সেশনের শেষ দিকে রেকর্ড ৯৪ হাজার ৭৮ ডলার উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস সূত্রে জানা যায়, ট্রথ সোশ্যাল পরিচালনাকারী ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ সম্পূর্ণ স্টক বিনিময়ের মাধ্যমে বাকটের সঙ্গে ক্রয় চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বাকটের প্যারেন্ট হিসেবে রয়েছে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের (এনওয়াইএসই) মালিকানা প্রতিষ্ঠান ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জ।
অনলাইন ট্রেডিং সংস্থা আইজির বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোরের মতে, বিটকয়েনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পেছনে দুটি বিষয় প্রভাব রেখেছে। এর মধ্যে একটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিসংক্রান্ত খবর। অন্যটি নাসডাকে ব্ল্যাকরকের বিটকয়েন ইটিএফের প্রথম দিনের ট্রেডিং।
৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য বেড়ে চলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ডিজিটাল সম্পদের প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিশীল মনোভাব বিটকয়েনকে নতুন করে শক্তি দেবে এবং কঠোর নিয়ন্ত্রক নীতিকে সহজ করবে।
কয়েনগেকোর তথ্যানুযায়ী, বাজারে বিদ্যমান বাড়তি উত্তেজনার কারণে বৈশ্বিক ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের মূল্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা একটি রেকর্ড।
নির্বাচনী প্রচারে ক্রিপ্টোকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রতিশ্রুতি অনুসারে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র হতে যাচ্ছে ‘বিশ্বের ক্রিপ্টো রাজধানী’।
ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ হিস্যা নিয়ে এগিয়ে রয়েছে বিটকয়েন। অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির দামও উল্লেখযোগ্য বেড়েছে। এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক ইলোন মাস্ক একাধিকবার উল্লেখ করা ডজকয়েন লাভের মুখ দেখেছে। শীর্ষ এ ধনীর মতে, ডজকয়েন হলো ‘দ্য পিপলস ক্রিপ্টো’।
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, বিটকয়েন মজুদ রাখার কৌশলগত পদক্ষেপ নেবেন এবং ডিজিটাল অ্যাসেটবান্ধব আর্থিক নিয়ন্ত্রক নিয়োগ করবেন। এর থেকে বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রিপ্টো শিল্পে নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করবেন।
ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলেও ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার আরো সম্প্রসারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কয়েকদিন আগে স্টোনএক্স ফাইন্যান্সিয়ালের বাজার বিশ্লেষক ম্যাট সিম্পসন বলেছিলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যদি ক্রিপ্টো খাতে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে, তবে এটি অনেক ভালো হবে। বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।’ (খবরঃ রয়টার্স)।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন