রফতানি কমায় সিঙ্গাপুরের জন্য অক্টোবরকে ‘হতাশাজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন অনেক অর্থনীতিবিদ। এ কারণে তারা ধারণা করছেন, দেশটি সম্ভবত ২০২৪ সালের রফতানি পূর্বাভাস পূরণ করতে পারবে না। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুর প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, জ্বালানি তেলবহির্ভূত দেশীয় রফতানি বা নন-অয়েল ডোমেস্টিক এক্সপোর্ট (এনওডিএক্স) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অক্টোবরে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এর আগে ব্লুমবার্গের জরিপে অংশ নেয়া বিশ্লেষকরা এনওডিএক্সে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
একই প্রতিবেদনে সেপ্টেম্বরে দেয়া বার্ষিক এনওডিএক্স প্রবৃদ্ধির হার সংশোধন করেছে এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুর। এর আগের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে সংশোধন করে দশমিক ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
আগস্টে চলতি বছরের এনওডিএক্স নিয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। তখন বছরে প্রথমার্ধের (জানুয়ারি-জুন) বাণিজ্য পর্যালোচনায় বলা হয়েছিল, ২০২৩ সালে মূল রফতানি ১২ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার পর এ বছর এনওডিএক্স পূর্বাভাসকৃত ৪-৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির নিচে থাকতে পারে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিবিএসের অর্থনীতিবিদ চুয়া হান টেং জানান, বছরের প্রথম ১০ মাসে এনওডিএক্স দশমিক ৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে যে বছরের শেষ মাসগুলোয় বহির্বিশ্বে চাহিদা স্থিতিশীল থাকলেও ২০২৪ সালের এনওডিএক্স পূর্বাভাস পূরণে ঝুঁকি রয়ে গেছে।’
আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওসিবিসির প্রধান অর্থনীতিবিদ সেলেনা লিং বলেন, ‘যদি নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এনওডিএক্স ৬ দশমিক ২ শতাংশ বাড়ে, তবে ২০২৪ সালের পূর্ণ বছরের প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ শতাংশ। পুরো বছরে ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে পৌঁছতে হলে বাকি দুই মাসে এনওডিএক্সের গড় বৃদ্ধির হার প্রায় ১২ শতাংশ হতে হবে।’
২০২৪ সালের লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার ধারা আগামী বছর গড়াতে পারে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে। সেলেনা লিং বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি, সম্ভাব্য শুল্ক বৃদ্ধি ও চীনের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’
এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের পরিসংখ্যান অনুসারে, আগের মাসের তুলনায় অক্টোবরে জ্বালানি তেলবহির্ভূত দেশীয় রফতানি কমেছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে মোট রফতানির এক-তৃতীয়াংশ দখল করে থাকা ইলেকট্রনিকসের রফতানি ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে নন-ইলেকট্রনিকস পণ্যের রফতানি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। এ মাসে চীনে রফতানি কমেছে ২২ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া জাপান, ইউরো অঞ্চল ও হংকংয়ে রফতানি কমেছে যথাক্রমে ২৩, ২১ দশমিক ৪ ও ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ। বিপরীত দিকে তাইওয়ানে রফতানি ২০ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডে রফতানি বেড়েছে সামান্য পরিমাণ। (খবরঃ দ্য স্ট্রেইটস টাইমস)।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন