ব্যক্তিগত বিলাসপণ্য বিক্রিতে দুর্বলতম বছরগুলোর একটি হতে যাচ্ছে ২০২৪ সাল। গত বছরের তুলনায় এ খাতে বিক্রি কমতে পারে ২ শতাংশ। এ পূর্বাভাস দিয়েছে ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং প্রতিষ্ঠান বেইন অ্যান্ড কোম্পানি। তাদের মতে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে শৌখিন পণ্যের বাজারে।
পূর্বাভাসে বেইন অ্যান্ড কোম্পানি জানায়, চলতি বছরে চীনে ব্যক্তিগত বিলাসপণ্যে বিক্রি কমতে পারে ২০-২২ শতাংশ। এতে সামগ্রিক বাজারের আকার হতে পারে ৩৬ হাজার ৩০০ কোটি ইউরো বা ৩৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। কভিড-১৯ মহামারী শুরুর আগে বছরজুড়ে খাতটিতে বিক্রির প্রবৃদ্ধি ছিল উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে ধনী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে যাদের আয় বেড়েছে তারা বিলাসবহুল পণ্যের প্রতি বেশি ঝুঁকেছে। কিন্তু মহামারীর পর এ প্রবণতা কমতে থাকে।
বেইন অ্যান্ড কোম্পানির অংশীদার ফেডেরিকা লেভাটো বলেন, ‘২০০৮-০৯ সালের বৈশ্বিক সংকটের পর এই প্রথম মহামারী বাদে ব্যক্তিগত বিলাসবহুল পণ্য খাতে পতন ঘটল।’ প্রতিবেদনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বিলাসবহুল পণ্য খাতে মন্দা ভাবের প্রভাব এরই মধ্যে এলভিএমএইচ ও কেরিংয়ের মতো বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ারকে প্রভাবিত করেছে, যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং প্রত্যাশার চেয়ে বেশি গুরুতর হতে পারে।
লেভাটো বলেন, ‘মুদ্রার তারতম্যের সঙ্গে সমন্বয় করে ছুটির মৌসুমে পোশাক, আনুষঙ্গিক ও সৌন্দর্য পণ্যসহ ব্যক্তিগত বিলাসপণ্যের বৈশ্বিক বিক্রিতে কোনো ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা নাও যেতে পারে। কারণ এ খাতে চীনের অবস্থান এখনো নিম্নমুখী।’
ব্র্যান্ডগুলোর দাম বাড়ানো, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও নির্বাচন এবং চীনের অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে ভোক্তাদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে অনেক গ্রাহক, বিশেষ করে কম বয়সীরা বিলাস পণ্য কিনতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। লেভাটো আরো বলেন, ‘গত দুই বছরে বিলাসবহুল পণ্যের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি থেকে পাঁচ কোটি কমেছে। ব্র্যান্ডগুলোর নেয়া কৌশলের ওপর শৌখিন পণ্যের বাজারের প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে। তা হতে পারে পণ্যের দাম নির্ধারণ।’
উচ্চমূল্য ভোক্তাদের নিরুৎসাহিত করছে বলে বেইনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আউটলেট স্টোরগুলো ভালো করছে। কারণ ক্রেতারা আরো সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্প সন্ধান করছে।
বেইন জানিয়েছে, ব্যক্তিগত বিলাসবহুল পণ্যের বাজার ২০২৫ সালে শূন্য থেকে ৪ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে (মুদ্রার সম্ভাব্য বিনিময় হারের সঙ্গে সমন্বয় করে)। বিক্রি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। অন্যদিকে ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে চীনের বাজারের পুনরুদ্ধার আশা করা হচ্ছে।
ফেডেরিকা লেভাটো বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা কমেছে। সম্ভাব্য সুদহার ও কর হ্রাসে আমেরিকানরা আরো বেশি খরচ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে।’ ব্যক্তিগত বিলাস পণ্যের বিপরীতে আতিথেয়তা ও ডাইনিংয়ের মতো খাতে আয়েশি ব্যয় এ বছর বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বেইন অ্যান্ড কোম্পানি। (খবরঃ রয়টার্স)।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন