সৌদি আরবে হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গ্রিন হাইড্রোজেন প্লান্ট – The Finance BD
 ঢাকা     সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

সৌদি আরবে হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গ্রিন হাইড্রোজেন প্লান্ট

  • ১৯/১১/২০২৪

সৌদি আরবে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গ্রিন হাইড্রোজেন প্লান্ট। ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এ কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মালিকানা প্রতিষ্ঠান নিওম গ্রিন হাইড্রোজেন কোম্পানির (এনজিএইচসি) সিইও ওয়েসাম আল-ঘামদি। তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি খাতের রূপান্তর নতুন গতি পেয়েছে। সেখানে গ্রিন হাইড্রোজেন প্রকল্প বিকল্প হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু প্রকল্পের আকার ও খরচের কারণে এখনো অনেক দেশে এটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ বিষয়ে নিজেদের কাজের আকার সম্পর্কে আল-ঘামদি বলেন, ‘এ প্লান্ট এত বড় পরিসরে নির্মাণ হচ্ছে যে আগে কেউ এমন উদ্যোগ নেয়নি।’
২ দশমিক ২ গিগাওয়াট ক্ষমতার ইলেকট্রোলাইজার চালানোর জন্য এ কারখানায় পুরোপুরি সৌর ও বায়ুশক্তি চালিত হবে। মূলত নবায়নযোগ্য জ্বালানির সাহায্যে ইলেকট্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় গ্রিন হাইড্রোজেন, যা বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ কমাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ এ ধরনের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসৃত হয় না।
ভারী পরিবহন ও ইস্পাত উৎপাদনের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল খাতে গ্রিন হাইড্রোজেন ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেসব দেশ ও কোম্পানি কার্বন নিঃসরণের কারণে বাড়তি চাপের মুখে পড়ছে, তারা গ্রিন হাইড্রোজেন জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে খরচ ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ বর্তমানে ব্যাপকভাবে গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনকে সীমিত করছে।
আল-ঘামদি জানান, সৌদি আরবে সৌর ও বায়ুশক্তির প্রাচুর্যতার কারণে এ প্লান্টের উৎপাদন ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম থাকবে, যা গ্রিন হাইড্রোজেনকে বাণিজ্যিকভাবে আরো কার্যকরী করে তুলবে। তার ভাষ্যে, ‘আমাদের কাছে সূর্যালোক ও বাতাসের অবাধ প্রবাহ রয়েছে। তাই আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা আছে।’
তিনি আরো জানান, নিওমের মতো বৃহদাকার সেটআপ ও দক্ষ উৎপাদন ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী খুব কম প্রকল্পের পক্ষে সম্ভব।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার প্রোডাক্টসের সঙ্গে প্রযুক্তি সহযোগিতা নিতে ৩০ বছরের অফটেক চুক্তি করেছে এনজিএইচসি। এটি সৌদি আরবে উৎপাদিত হাইড্রোজেন আন্তর্জাতিক বাজারে অ্যামোনিয়ায় রূপান্তর করে পৌঁছতে সাহায্য করবে, এতে পরিবহন ও বিতরণ সহজ হবে।
উত্তর-পশ্চিম রেড সি ডেভেলপমেন্ট জোনে নিওম প্রকল্পের মাঝে এনজিএইচসির অবস্থান, যা কৌশলগতভাবে অবধারিত সৌর ও বায়ুশক্তি প্রাপ্তির সুবিধা দিচ্ছে। এ প্লান্ট সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’-এর একটি অংশ। দেশটির অর্থনীতিকে জ্বালানি তেলনির্ভরতা থেকে সরিয়ে আনতে এ লক্ষ্য প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আওতায় সৌদি আরবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পর্যটন ও প্রযুক্তি খাতের সম্প্রসারণ ঘটছে।
এনজিএইচসির সিইও ওয়েসাম আল-ঘামদি বলেন, ‘প্রকল্পটির জন্য কর্মী নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো গ্রিন এনার্জি খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি। বর্তমানে এনজিএইচসির কর্মী বাহিনীর ৬০ শতাংশের বেশি সৌদি নাগরিক, যারা অভিজ্ঞ শিল্প পেশাদার ও সদ্য স্নাতক।’
এনজিএইচসি গ্রিন হাইড্রোজেন খাতে আরো বিনিয়োগ করবে। বর্তমানে জার্মানির কোম্পানি থিসেনক্রুপের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি গবেষণা ও উন্নয়ন অংশীদারত্বে ইলেকট্রোলাইজার প্রযুক্তি পরিমার্জন ও অপটিমাইজ নিয়ে কাজ করছে।
বিশ্বব্যাপী গ্রিন হাইড্রোজেনের প্রতি আগ্রহ দ্রুত বাড়ছে। তবে আল-ঘামদি মনে করেন যে নিওমের প্রকল্পটি সৌদি আরবের প্রাকৃতিক সুবিধাকে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগানোর জন্য বিশেষভাবে নকশাকৃত। তিনি বলেন, ‘আকার, অবস্থান ও অংশীদারত্ব, যা আমাদের অন্যদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে রাখছে।’ (খবরঃ আরব নিউজ)

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us