বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা আগামী বছরগুলোয় কমতে পারে। এ সময় ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমালেও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে উত্তোলন বাড়বে। তাই আগামী বছর চাহিদার তুলনায় জ্বালানি তেলের অতিরিক্ত সরবরাহের মুখোমুখি হতে পারে বিশ্ব। বৃহস্পতিবার মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)।
আইইএ জানায়, ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমানো অব্যাহত থাকলেও আগামী বছর চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত জ্বালানি তেল সরবরাহের পরিমাণ হতে পারে দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি। আর অতিরিক্ত সরবরাহের পেছনে ভূমিকা রাখবে চীনের নিম্নমুখী চাহিদা। বিশ্বে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীন। বর্তমানে দেশটিতে বেশকিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার বেড়েছে। ফলে কমেছে জ্বালানি তেলের চাহিদা। প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিবহনসহ অন্যান্য শক্তি উৎপাদন খাতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে চীনে। এটি জ্বালানি তেলের দুর্বল চাহিদার ওপর আরো চাপ তৈরি করছে। উল্লেখ্য, পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক ও রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সংগঠন ওপেক প্লাস। সংগঠনটি জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছিল। বাজার বিশ্লেষকরা জানান, আগামী বছর অতিরিক্ত সরবরাহের সম্ভাবনা ওপেক প্লাসের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
ওপেক প্লাস তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে আগামী বছরের জন্য বৈশ্বিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে। এ সময় পণ্যটির চাহিদা দৈনিক গড়ে ৯ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আইইএ প্রতিবেদনে জানায়, আগামী বছর ওপেক প্লাস-বহির্ভূত দেশগুলোয় দৈনিক গড়ে ১৫ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়তে পারে। এ উত্তোলন বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গায়ানা ও আর্জেন্টিনার মতো দেশ।
এদিকে চলতি বছর বৈশ্বিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আইইএ। চলতি বছরের জন্য পণ্যটির চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬০ হাজার ব্যারেল বাড়িয়ে দৈনিক গড়ে ৯ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল করেছে সংস্থাটি।
চীনের নিম্নমুখী চাহিদায় বিশ্ববাজারে কয়েক দিন ধরে নিম্নমুখিতায় আছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহার কমানোর সম্ভাবনা কমে যাওয়ায় শুক্রবার জ্বালানি তেলের দাম ২ শতাংশের বেশি কমেছে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম শুক্রবার আগের দিনের তুলনায় ১ ডলার ৫২ সেন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য নেমেছে ৭১ ডলার ৪ সেন্টে।
মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম শুক্রবার কমেছে আগের দিনের তুলনায় ১ ডলার ৬৮ সেন্ট বা ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ব্যারেলপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ৬৭ ডলার ২ সেন্টে। এদিকে চলতি সপ্তাহে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম যথাক্রমে ৪ ও ৫ শতাংশ কমেছে। (খবরঃ রয়টার্স)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন