চীনে চিপ রফতানি বন্ধ করতে টিএসএমসিকে নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন

চীনে চিপ রফতানি বন্ধ করতে টিএসএমসিকে নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের

  • ১৩/১১/২০২৪

চীনা গ্রাহকদের কাছে এআই অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার হয়, এমন উন্নত চিপ রফতানি বন্ধ করতে তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিকে (টিএসএমসি) নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করছে।
সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ টিএসএমসিকে একটি চিঠি পাঠায়। এতে বলা হয়, সাত ন্যানোমিটার বা এর চেয়ে উন্নত ডিজাইনের বিশেষ কিছু চিপ চীনে রফতানি করতে পারবে না টিএসএমসি। সাধারণত চিপের আকার যত ছোট হয়, এর কর্মক্ষমতা তত বেশি। এ ধরনের উন্নত চিপ এআই এক্সিলারেটর ও গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
এর আগে রয়র্টাসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের এআই প্রসেসরে টিএসএমসির একটি চিপ পাওয়া গেছে। তখন এ বিষয়ে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগকেও জানিয়েছিল টিএসএমসি। প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান টেক ইনসাইটস হুয়াওয়ের ডিভাইসটি পরীক্ষা করে টিএসএমসির চিপ পেয়েছিল। এ ঘটনায় মার্কিন রফতানি নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি সামনে আসে। হুয়াওয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোম্পানির তালিকায় রয়েছে। ফলে কেউ হুয়াওয়ের কাছে পণ্য বা প্রযুক্তি বিক্রি করতে চাইলে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের লাইসেন্স নিতে হয়। এক্ষেত্রে হুয়াওয়ের এআই উদ্যোগকে সহায়তা করে এমন কোনো লাইসেন্স সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্র দেবে না।
টিএসএমসি গত মাসে জানিয়েছিল, তারা চীনভিত্তিক চিপ ডিজাইনার সোফগোকে চিপ সরবরাহ করা স্থগিত করেছে। কারণ কোম্পানিকে দেয়া চিপটি হুয়াওয়ের এআই প্রসেসরে পাওয়া চিপের সাথে মিলে গেছে। তবে কীভাবে চিপটি হুয়াওয়ের অ্যাসেন্ড ৯১০বি প্রসেসরে ব্যবহার হলো, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রসেসরটি ২০২২ সালে উন্মোচন করা হয়। এটি চীনা কোম্পানিটির তৈরি সবচেয়ে উন্নত এআই চিপ হিসেবে ধরা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ হুয়াওয়ে ছাড়া আরো অনেক কোম্পানিকে বিপাকে ফেলতে পারে। এমনকি অন্য কোন কোম্পানি চীনা এআই প্রসেসরের জন্য চিপ সরবরাহ করছে সেদিকেও নজর রাখতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। চিঠি পাওয়ার পর গতকাল থেকে চিপ সরবরাহ স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে টিএসএমসি। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এদিকে তাইওয়ানের অর্থনৈতিক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, টিএসএমসি নিয়মিতভাবে সরকারের সঙ্গে রফতানি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক আলোচনা করেছে। কোম্পানিটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম ও বিধিনিষেধ মেনে চলবে বলে জানিয়েছে। টিএসএমসির এক মুখপাত্রও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। তবে কোম্পানিটির ভাষ্য, তারা রফতানি নিয়ন্ত্রণ আইনসহ প্রযোজ্য সব নিয়ম ও বিধিনিষেধ মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দলের আইনপ্রণেতারা চীনের ওপর রফতানি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন। এমনকি বাণিজ্য বিভাগের আইনের প্রয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
এর আগে ২০২২ সালে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ চীনে এআই চিপ রফতানি বন্ধ করার আদেশ দিয়ে এনভিডিয়া ও এএমডিকে ‘ইজ ইনফমর্ড’ চিঠি প্রেরণ করেছিল। কোম্পানি দুটি ছাড়াও সেসময় ল্যাম রিসার্চ ও অ্যাপ্লাইড ম্যাটেরিয়ালস ও কেএলএর চিপের যন্ত্রাংশ নির্মাতা কোম্পানিগুলোকেও চীনে উন্নত চিপ তৈরির সরঞ্জাম রফতানি সীমিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্র চীনে প্রযুক্তি রফতানি সম্পর্কিত নিয়ম হালনাগাদ করতে বিলম্বিত করেছে। বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি এ বিষয়ে নতুন নিয়মের খসড়া তৈরি করেছে। এর আওতায় বাণিজ্য বিভাগের নিষিদ্ধ কোম্পানির তালিকায় প্রায় ১২০টি চীনা কোম্পানি যোগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশটির চিপ নির্মাতা কারখানা, যন্ত্রাংশ নির্মাতা এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। (খবরঃ রয়টার্স)।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us