বিশ্ব বাণিজ্যে আধিপত্য থাকবে এআই সফটওয়্যার ও ক্লাউড সার্ভিসসহ আইটিভিত্তিক ১৮ শিল্পের – The Finance BD
 ঢাকা     মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

বিশ্ব বাণিজ্যে আধিপত্য থাকবে এআই সফটওয়্যার ও ক্লাউড সার্ভিসসহ আইটিভিত্তিক ১৮ শিল্পের

  • ২৭/১০/২০২৪

আগামী দুই দশকে ই-কমার্স, এআই সফটওয়্যার ও ক্লাউড সার্ভিসসহ ১৮টি ভবিষ্যৎ শিল্প বৈশ্বিক অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করতে মুখ্য ভূমিকা রাখবে। এসব শিল্প ২০৪০ সালের মধ্যে ২৯-৪৮ ট্রিলিয়ন (২৯-৪৮ লাখ কোটি) ডলার আয় ও ২-৬ ট্রিলিয়ন (২-৬ লাখ কোটি) ডলার মুনাফা অর্জন করতে পারে। ম্যাকেঞ্জি গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক প্রকাশিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
ম্যাকেঞ্জির ভাষ্যমতে, কিছু শিল্পের মূল্য সংযোজন বা ভ্যালু অ্যাডিশনের গতি বেশি, যা অর্থনীতি, সমাজ বা পরিবেশের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। এগুলোকে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে দেখা হয়। এসব শিল্পের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও উচ্চ গতিশীলতা। দ্রুত বর্ধনশীল এসব শিল্প সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি বড় অংশজুড়ে থাকে এবং কোম্পানির শেয়ারমূল্যও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ে। ম্যাকেঞ্জি গ্লোবাল ইনস্টিটিউট এমন ১৮টি শিল্পক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে, যা ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ই-কমার্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সফটওয়্যার, ক্লাউড পরিষেবা, রোবটিকস, ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সেমিকন্ডাক্টারসহ বেশকিছু প্রযুক্তি। এ ক্ষেত্রগুলোর সন্ধান পেতে সংস্থাটি ২০০৫-২০ সালের মধ্যে বিশ্বের তিন হাজার বৃহত্তম কোম্পানির তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। সেই সঙ্গে তারা ১২টি বর্তমান শিল্প চিহ্নিত করেছে, যেমন বায়োফার্মাসিউটিক্যালস, ক্লাউড সেবা, ই-কমার্স ও বৈদ্যুতিক যানবাহন। বর্তমান এসব শিল্প গত ২০ বছরে গঠিত হয়েছে।
গবেষণাটি এ ১৮ শিল্প ও এর বাইরে অন্যান্য শিল্পের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য পার্থক্য তুলে ধরেছে। আইটিভিত্তিক শিল্পগুলো অন্যান্য শিল্পের তুলনায় অনেক বেশি মুনাফা তৈরি করে, বিপুলসংখ্যক প্রভাবশালী উদ্যোক্তা তৈরি করে এবং নতুন কোম্পানিগুলোকে সফল হওয়ার জন্য শক্তিশালী সুযোগ তৈরি করে। ম্যাকেঞ্জি গবেষণার ফল বলছে, বর্তমান ১২টি শিল্প ২০০৫-২০ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ই-কমার্স, বায়োফার্মাসিউটিক্যালস, বৈদ্যুতিক যানবাহন, ভোক্তা ইন্টারনেট ও ক্লাউড সেবা। এ সময় শিল্পগুলোর আয় বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ এবং বাজার মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ১৬ শতাংশ। এর বিপরীতে অন্যান্য শিল্প একই সময় আয়ে ৪ শতাংশ বৃদ্ধির হার ও সম্পদমূল্যে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। বর্তমান ক্ষেত্রগুলো কীভাবে বিকশিত হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ ক্ষেত্রগুলো তৈরিতে সহায়তা করবে এমন কিছু বিষয়ও চিহ্নিত করা হয়েছে গবেষণায়৷।
ম্যাকেঞ্জির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন একটি ক্ষেত্র গঠনের প্রধান উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়িক মডেল বা প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, বিনিয়োগের জন্য শক্তিশালী প্রণোদনা, যা গুণমান উন্নত করে ও একটি বৃহৎ বা প্রসারিত বাজার। এ উপাদানগুলো আজকের ১২টি শিল্পে তীব্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে। বর্তমান ক্ষেত্রগুলোর ধারণাকে ব্যবহার করেই ১৮টি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ ক্ষেত্র অনুসন্ধান করা হয়েছে এ গবেষণায়। এ শিল্পগুলোর বৈশ্বিক জিডিপিতে অংশীদারি আজকের ৪ শতাংশ থেকে ২০৪০ সালে ১০-১৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
সম্ভাব্য শিল্পগুলোর গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বিশ্লেষকরা বলছেন, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির জন্য ভবিষ্যৎ ক্ষেত্রগুলো জানা ও বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা এসব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করতে চায়। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্যও জরুরি, যারা এ শিল্পে পুঁজির বিনিয়োগ করতে চান। এছাড়া নীতিনির্ধারক, যারা জানতে চান এ শিল্পগুলো তাদের দেশের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তাদেরও সম্ভাব্য শিল্প সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us