রিপাবলিকান এই প্রার্থী জানান, মার্কিন প্রতিপক্ষরা ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আমেরিকান স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করবে না। কারণ তারা এতে একটি শক্তিশালী, এমনকি অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়ার ভয় পাবে। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে চীন তাকে উত্তেজিত করার সাহস করবে না। কেননা তিনি দাবি করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ‘খ্যাপাটে’।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেন। একইসাথে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে চীন যদি তাইওয়ানকে অবরোধ করতে চায় তাহলে তিনি বেইজিংয়ের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন। ট্রাম্প বলেন, “আমি বরং বলবো, আমাকে চীনের ওপর তখন ১৫০ থেকে ২০০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করতে হবে।” রিপাবলিকান এই প্রার্থী জানান, মার্কিন প্রতিপক্ষরা ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আমেরিকান স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করবে না। কারণ তারা এতে একটি শক্তিশালী, এমনকি অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়ার ভয় পাবে। ট্রাম্প আরও জানান, তাইওয়ানের অবরোধ ঠেকাতে তাকে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে হবে না। কারণ তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং আমাকে সম্মান করেন এবং তিনি জানেন যে আমি খ্যাপাটে।” সাবেক মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তার ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। একইসাথে ট্রাম্প জানান, তিনি ইউক্রেন আক্রমণ না করার জন্য মস্কোকে হুমকি দিয়েছিলেন।
এদিকে ট্রাম্প গত ১৭ অক্টোবর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি দেশটির সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হতে সহায়তা করেছেন। এ মন্তব্য ইঙ্গিত করে যদি ট্রাম্প ৫ নভেম্বর নির্বাচনে জয়লাভ করেন তবে তিনি ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারেন। ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচারণার সময় প্রায়ই জেলেনস্কির সমালোচনা করে এসেছেন। জেলেনস্কিকে ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিক্রেতা’ বলে অভিহিত করেছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কারণ ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা নিয়েছে।
ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বিরুদ্ধে রাশিয়ার সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। একইসাথে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনকে শান্তি চুক্তির জন্য কিছু ভূমি রাশিয়ার কাছে ছাড় দিতে হতে পারে, যা কিয়েভের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত।
পিবিডি পডকাস্টে প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের সাথে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কি যুদ্ধ শেষ করতেই শুধু ব্যর্থ নন, বরং তিনি যুদ্ধ শুরুর জন্যও দায়ী। ট্রাম্প বলেন, “এটা মানে এই নয় যে আমি তাকে সাহায্য করতে চাই না। কারণ আমি এমন লোকদের জন্য খুব খারাপ অনুভব করি। কিন্তু তার কখনই এই যুদ্ধ শুরু করতে দেওয়া উচিত হয়নি। যুদ্ধ একটি পরাজয়।”
সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে একটি সাক্ষাতে জেলেনস্কি ট্রাম্পের কাছে যুদ্ধ শেষ করার জন্য তার ‘ভিক্টরি প্ল্যান’ উপস্থাপন করেছিলেন। এই সাক্ষাতকে উভয় নেতা আন্তরিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ট্রাম্পের এ মন্তব্য ইঙ্গিত করে, তিনি যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ৫ নভেম্বর নির্বাচনে পরাজিত করতে সক্ষম হন, তবে তিনি ইউক্রেনের জন্য সহায়তা কমানোর চেষ্টা করতে পারেন। তিনি বারবার বলেছেন, তিনি অফিসে আসার আগে এই সংঘাত শেষ করতে পারেন। তবে কীভাবে তা করবেন, সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।
কমলা হ্যারিস ইউক্রেনের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং তিনি পূর্ব ইউরোপের দেশটির বিজয়কে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যক বলে বিবেচনা করেন। তিনি ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সক্ষমতা তার নেই। (খবরঃ বিবিসি)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন