চলতি বছর তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়ে ৩১ কোটি ৬১ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে।
চলতি বছর তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়ে ৩১ কোটি ৬১ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে। এদিকে ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছিল ৩০ কোটি ৩৯ লাখ ইউনিট। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। আইডিসির তথ্যানুযায়ী, এ নিয়ে টানা পাঁচটি প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিক্রির প্রতিবেদন ইতিবাচক রয়েছে এবং বছরের দ্বিতীয়ার্ধও শুরু হয়েছে একটি ভালো ফল দিয়ে। ওয়াল্ডওয়াইড কোয়ার্টারলি মোবাইল ফোন ট্র্যাকার শীর্ষক প্রান্তিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। এ বিষয়ে আইডিসির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ব্যবস্থাপক উইল ওং বলছেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভিভো, অপো, শাওমি, লেনোভো ও হুয়াওয়ের মতো চীনা কোম্পানিগুলোর উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি স্মার্টফোনের বাজারকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করেছে।’ তবে প্রবৃদ্ধি সব কোম্পানির ক্ষেত্রে সমান নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিছু কোম্পানি উচ্চ উৎপাদন খরচের সম্মুখীন হয়েছে, আবার অন্যরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো উদীয়মান বাজারে সুবিধাজনক বিনিময় হার থেকে উপকৃত হয়েছে।’
ওয়ার্ল্ডওয়াইড ক্লায়েন্ট ডিভাইসের গবেষণা পরিচালক নাবিলা পোপাল বলেন, ‘চলতি বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে চীনা কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে অ্যাপলের বিক্রি বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, যার মূল কারণ পূর্ববর্তী মডেলগুলোর জন্য উচ্চ চাহিদা ও নতুন আইফোন ১৬ সিরিজ বাজারে আসা। পুরনো আইফোন মডেল, বিশেষ করে আইফোন ১৫-এর ব্যাপক প্রচার এবং অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের জন্য বাড়তি মার্কেটিংয়ের কারণে ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটি ভালো ফল দেখিয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের বাজারে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স ধীরগতিতে উদ্বোধন হওয়া সত্ত্বেও অ্যাপল আশা করছে সামনে ছুটির মৌসুমে তাদের আরো অগ্রগতি হবে। কারণ অনেক গ্রাহক যারা আইফোন ১৩ কিংবা ১২ ব্যবহার করছেন, তারা হয়তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সক্ষম স্মার্টফোনে আপগ্রেড করার চিন্তা করবেন।
এদিকে গত বছরের তুলনায় স্যামসাংয়ের মোট বিক্রির সংখ্যা কমলেও ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে কোম্পানিটি। এ সময় স্যামসাং স্মার্টফোন বিক্রি করেছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ইউনিট। স্যামসাং বিভিন্ন মডেলে গ্যালাক্সি এআই ফিচার চালু করা শুরু করেছে এবং নতুন গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড সিক্স ও গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ সিক্স ফোল্ডেবল ফোনগুলো গ্যালাক্সি এআইসহ বাজারে এনেছে, যা প্রিমিয়াম সেগমেন্টে তাদের কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করেছে।
স্যামসাংয়ের পর ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। চলতি বছর তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটি আইফোন বিক্রি করেছে ৫ কোটি ৬০ লাখ ইউনিট। প্রযুক্তিবিদরা ধারণা করছেন, নতুন আইফোন ১৬ সিরিজের কর্মক্ষমতা অ্যাপলকে বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে শীর্ষ স্মার্টফোন কোম্পানি হতে এবং ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে কোম্পানির সাফল্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
এদিকে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বাজারের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হলেও বাজার গবেষণা সংস্থা ক্যানালিস কিছু সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছে। যেমন কিছু অঞ্চলে চাহিদা নিয়ে অনিশ্চয়তা ও নিয়ন্ত্রক প্রতিবন্ধকতা ফোন নির্মাতাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন