ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে চা শ্রমিকদের আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গেলে তার সফরের সময়ই চা শ্রমিকদের সংগঠনগুলো ধর্মঘটে নামে। গত সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চল কার্যত স্তব্ধ।
২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকরা। শ্রমিকদের এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে অনীত থাপার ভারতীয় জনতা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। বনধকে সমর্থন জানিয়েছে বিজেপিও। রবিবার চা শ্রমিকদের বোনাস নিয়ে চতুর্থ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ছিল। বৈঠকে মালিকপক্ষ স্পষ্ট করে দেয়, তারা ১৩ শতাংশের থেকে বেশি বোনাস দিতে পারবেন না। চা শ্রমিকরা ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে অনড় রয়েছে।
শুরু থেকেই ২০ শতাংশ বোনাসের দাবি তুলেছেন চা শ্রমিকদের সংগঠনগুলো। তবে শ্রমিকদের ২০ শতাংশ বোনাস দেয়ার দাবিতে নারাজ চা বাগানের মালিক কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকাল থেকে শিলিগুড়ির দাগাপুরে শ্রমিক ভবনে ফের বোনাস নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক বসেছিল। সেই বৈঠকে চা বাগানের মালিকরা ২০ শতাংশ বোনাস দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। বৈঠক থেকে বের হয়েই বনধের ডাক দেয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর যৌথমঞ্চ।
কলকাতায় ফেরার পথে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কোনো বনধ হচ্ছে না, পশ্চিমবঙ্গে বনধ হয় না। এটি রাজনৈতিকভাবে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা। তিনি স্পষ্ট করে জানান, আমি কোনো বনধ সমর্থন করি না। চা শ্রমিকদের বোনাস নিয়ে আলোচনা চলছে, লেবার কমিশন বিষয়টি দেখছে। মমতা বলেন, কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবে পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না বলে পরিস্কার জানিয়েছেন।
দুর্গাপূজার আগে প্রায় আট বছর পর পাহাড়ে এ ধরনের থমথমে পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাকে কটাক্ষ করে বলেন, চা মালিকেরা মুখ্যমন্ত্রীর ভালো বন্ধু। তাই তিনি শ্রমিকদের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি আরও বলেন, চা শ্রমিকদের দাবিগুলো প্রাসঙ্গিক, তবে সরকার মালিকপক্ষের হয়ে দালালি করছে।
চা শ্রমিকদের আন্দোলন ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে চিন্তিত স্থানীয় মানুষ।
সূত্র : আনন্দবাজার।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন