তালিবান রাশিয়ার ব্রিকস সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ চেয়েছে – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন

তালিবান রাশিয়ার ব্রিকস সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ চেয়েছে

  • ২৬/০৯/২০২৪

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান বুধবার নিশ্চিত করে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার আয়োজিত উদীয়মান অর্থনীতি সম্পন্ন প্রধান রাষ্ট্রসমূহের আন্তঃসরকারি গোষ্ঠী ব্রিকস’এর আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত ব্রিকস। ব্রিকস-এর ১০ সদস্য দেশের নেতারা ২২-২৪ অক্টোবর রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল শহর কাজানে বৈঠক করবেন। মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এ বছর ব্লকটিতে যোগ দেয়।
তালিবানের ডেপুটি মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিতরাত তাদের সরকারী সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রচারিত একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “ব্রিকস একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ফোরাম, এবং একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসাবে, আফগানিস্তানের এই ধরনের অর্থনৈতিক সমাবেশে যোগ দেওয়া উচিত।”
ফিতরাত কাবুলে তাদের সরকারী শিরোনাম ব্যবহার করে বলেন, “ইসলামী আমিরাত আসন্ন ব্রিকস ফোরামে উপস্থিত থাকতে চায়, এবং এই অনুরোধটি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজক দেশকে জানানো হয়েছে।” তালিবান আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশ দ্বারা স্বীকৃত নয়। তিনি আর কোন বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি।
তালিবানের দাবির বিষয়ে রাশিয়ার কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তিন বছর আগে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলো তৎকালীন বিদ্রোহী তালিবানের সাথে প্রায় দুই দশকের যুদ্ধের পর তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়, তখন থেকে মস্কো আফগানিস্তানের এই কার্যক্ষম সরকারের নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠ অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
কিন্তু, স্বীকৃতি প্রদানের ইস্যুতে বৈশ্বিক ঐকমত্যের সাথে সঙ্গতি রেখে তালিবানকে একটি বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি রাশিয়া। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিষয়ে আলোচনার জন্য তালিবান প্রতিনিধিদল বারবার মস্কো সফর করেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র ও বিচার মন্ত্রণালয় জুন মাসে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে রাশিয়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে উগ্রপন্থি আফগান গোষ্ঠীকে বাদ দেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করে। এই পদক্ষেপের ফলে জল্পনা শুরু হয়েছে যে মস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে কাবুল কর্তৃপক্ষকে প্রায় স্বীকৃতি দেওয়ার নিকটে।

তালিবান ২০০৩ সাল থেকে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর তালিকায় রয়েছে, যার মধ্যে আল-কায়েদাও রয়েছে। আফগানিস্তানের কার্যক্ষম সরকার দরিদ্র দক্ষিণ এশীয় এই দেশটিতে শরিয়া নামে পরিচিত ইসলামী আইনের কঠোর ব্যাখ্যার ভিত্তিতে তা প্রয়োগ করেছে। এই আইনের অধীনে আফগান মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারী শিক্ষার্থীদের আসন বাতিল করা হয়েছে, বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সঙ্গীতও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তালিবান ব্যাভিচারের মতো অপরাধের জন্য নারীদের পাথর ছুঁড়ে মারা এবং প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডেরও প্রচলন করেছে।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য দেশ
তালিবান শাসনকে কূটনৈতিক বৈধতা দেওয়ার কথা বিবেচনা করার আগে জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার নারীদের উপর বিধিনিষেধ দ্রুত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে। তালিবান নেতারা তাদের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে বলে, এগুলি স্থানীয় সংস্কৃতি এবং শরিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। চীন ও তালিবান
চীনও কাবুলের সাথে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ দুটি দেশের মধ্যে চীন একটি, যারা আনুষ্ঠানিকভাবে তালিবান-নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে গ্রহণ করেছে।
চীনা কোম্পানিগুলো তালিবানের সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়াতে প্রধানত আফগান খনির খাতকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
তালিবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি গত সপ্তাহে কাবুলে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাদের সরকার বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০টি আফগান দূতাবাস এবং কনস্যুলেট নিয়ন্ত্রণ করে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করছে। তিনি বলেন তালিবান পশ্চিমা দেশগুলির সাথে “বন্ধুত্বপূর্ণ” সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো ব্যাপকভাবে জোর দিয়ে বলে যে তালিবানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নারীর অধিকার, মেয়েদের এবং নারীদের জন্য শিক্ষা এবং চলাফেরার স্বাধীনতা সম্পর্কিত তাদের কার্যক্রমের উপর নির্ভর করে। (সূত্রঃ ভয়েস অব আমেরিকা)

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us