গ্রিড সক্ষমতার অভাবে বিশ্বজুড়ে অপচয় হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ অপরাহ্ন

গ্রিড সক্ষমতার অভাবে বিশ্বজুড়ে অপচয় হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি

  • ২৩/০৯/২০২৪

বিশ্বজুড়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। বিনিয়োগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামনে আসছে এ খাতের বড় একটা দুর্বলতাও। সেটা হলো অপর্যাপ্ত সরবরাহ ব্যবস্থা (গ্রিড)। হিসাব করে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে যে পরিমাণ সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা যাচ্ছে না, তা ৪৮০টি পরমাণু চুল্লিতে উৎপাদিত বিদ্যুতের সমান।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের এক খবরে বলা হয়, দেশটিতে একটি বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য গত জানুয়ারিতে একটি আবেদন করেছিল মার্কিন কোম্পানি ব্ল্যাকরক। কিন্তু অপর্যাপ্ত গ্রিডের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার সে আবেদন নাকচ করে দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) তথ্যানুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের সক্ষমতা বাড়ে ৫৬০ গিগাওয়াট, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৬৪ শতাংশ বেশি। যদিও এ-সংশ্লিষ্ট অনেক প্রকল্প গ্রিডে যুক্ত হতে পারছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটা ঘটছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় থার্মাল বা পাওয়ার প্লান্ট না থাকার কারণে। এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা যে হারে বাড়ছে, সে হারে এর সরবরাহ ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ছে না।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লরেন্স বার্কেলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে প্রায় দেড় হাজার গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা যায়নি, যা ২০২৫ সালের চেয়ে নয় গুণ বেশি।
জাপানের ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিকসের গবেষণা পরিচালক জুনিচি ওগাসাওয়ারা বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক আইন কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানি স্টেশন করার আবেদন বেড়ে গেছে। কারণ নতুন আইনে ট্যাক্সে ছাড় দেয়ার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।’
বিস্তৃত গ্রিড থাকার পরও একই ধরনের সংকটে পড়েছে ইউরোপও। এ অঞ্চলের দেশগুলো বর্তমানে রাশিয়ার ওপর থেকে জ্বালানিনির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এজন্য ইউরোপে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগও বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় গ্রিড সক্ষমতা বাড়ছে না।
লরেন্স বার্কেলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি ও ব্লুমবার্গএনইএফের তথ্য সমন্বয় করে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে উৎপাদিত সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা গেলে বার্ষিক সক্ষমতা বাড়বে ৩ হাজার ৩০০ টেরাওয়াট। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে অন্তত ৪৮০টি পারমাণবিক চুল্লি প্রয়োজন।
আইইএর হিসাব অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি কেন্দ্রে বৈশ্বিক বিনিয়োগ ২০২৩ সালে পৌঁছেছে ৬৭ হাজার কোটি ডলারে, যা ২০১৫ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। একই সময়ে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ হয় ৩৩ হাজার কোটি ডলার। আরেকটি সমস্যা হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি কেন্দ্র যত দ্রুত সময়ে করা যায়, সরবরাহ ব্যবস্থা ততটা দ্রুত করা যায় না। নানা ধরনের অনুমোদন নেয়া কিংবা কাঁচামাল বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন কারণেও সরবরাহ ব্যবস্থার কাজ বিলম্বিত হয়। (খবরঃ নিক্কেই এশিয়া)

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us