বৈশ্বিক তুলা উৎপাদন ও মজুদ ২০২৪-২৫ মৌসুমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে যেতে পারে। সম্প্রতি এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। এছাড়া এ সময় বিশ্বব্যাপী তুলা ব্যবহারের পূর্বাভাসও সংশোধন করা হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড এগ্রিকালচারাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড এসটিমেটস (ডব্লিউএএসডিই) রিপোর্টের সেপ্টেম্বর ২০২৪ সংস্করণে ইউএসডিএ জানায়, চলতি মৌসুমে মোট ১১ কোটি ৬৪ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) তুলা উৎপাদন হতে পারে। এটি এর আগে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় ১২ লাখ বেল কম। অন্যদিকে এ সময় তুলার বৈশ্বিক সমাপনী মজুদ হতে পারে ৭ কোটি ৬৫ লাখ বেল, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ৭ কোটি ৭৬ লাখ বেল কম।
ইউএসডিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাপী তুলা ব্যবহার আগের দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার বেল কমতে পারে। এ সময় বিশ্বব্যাপী তুলার প্রধান বাজারগুলোয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পণ্যটির ব্যবহার কমতে পারে। এর মধ্যে ভিয়েতনামে দুই লাখ, বাংলাদেশ ও তুরস্ক এক লাখ বেল করে ব্যবহার কমতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানে নিম্নমুখী উৎপাদন বিশ্বব্যাপী তুলার মোট উৎপাদন কমার পেছনে ভূমিকা রাখবে। যদিও চীনে উৎপাদন বেড়েছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। ইউএসডিএ জানায়, এ পরিস্থিতিতে পণ্যটির বৈশ্বিক আমদানি-রফতানিও প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার বেল কমে যেতে পারে। তবে এ সময় ভারতে আমদানি বাড়তে পারে। কিন্তু চীন, ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মতো বৃহত্তম তুলা ব্যবহারকারী দেশগুলোয় আমদানি কমতে পারে, যা সামগ্রিক আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখবে। বিশ্বব্যাপী তুলার দাম ‘এ’ সূচক দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সূচক অনুসারে, চলতি বছর প্রতি পাউন্ড তুলার দাম আগের তুলনায় ৮১ দশমিক ৫ সেন্টে স্থিতিশীল রয়েছে। এর আগে ২০২৩-২৪ মৌসুমে তুলার প্রারম্ভিক মজুদ তুলনামূলক বেশি ছিল। এমনকি সে সময় কারখানাগুলোয় তুলার ব্যবহার বৃদ্ধি ও সমাপনী মজুদও কিছুটা বেড়েছিল।
এদিকে ইউএসডিএ যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদনের পূর্বাভাস ছয় লাখ বেল কমিয়ে ১ কোটি ৪৫ লাখ বেলে নামিয়ে এনেছে। এছাড়া সমাপনী মজুদও পাঁচ লাখ বেল কমিয়ে ৪০ লাখে নামিয়ে এনেছে সংস্থাটি। চলতি মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উঁচু অঞ্চলে তুলা উৎপাদন কমে গেছে। এ অবস্থায় দেশটির কৃষি পরিসংখ্যানবিষয়ক সংখ্যা ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল স্ট্যাটিসটিকস সার্ভিসের (এনএএসএস) সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে ১ কোটি ৪৫ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা আগস্টের তুলনায় প্রায় ছয় লাখ বেল কম। সংস্থাটির হিসাবে এ সময় প্রতি একরে ৮০৭ পাউন্ড তুলার উৎপাদন হতে পারে, যা আগের মাসের তুলনায় ৩৩ পাউন্ড কম।
উৎপাদন কমে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে রফতানিও দুই লাখ বেল কমে ১ কোটি ১৮ লাখে পৌঁছাতে পারে। অন্যদিকে সমাপনী মজুদ পাঁচ লাখ বেল কমে ৪০ লাখে নেমে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪-২৫ মৌসুমে কৃষক পর্যায়ে তুলার গড় দাম প্রতি পাউন্ডে ৬৬ সেন্ট হতে পারে। ২০২৩-২৪ সালে দেশটিতে সংশোধিত হিসাবে ৪ লাখ বেল অতিরিক্ত প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত মজুদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে অজ্ঞাত সংখ্যক বেল হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। পরে হালনাগাদ তথ্যের ভিত্তিতে সংশোধিত হিসাবে তা চার লাখ বেলে নামিয়ে আনা হয়েছে।
সূত্র : ফাইবার টু ফ্যাশন।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন