লেদ মেশিন দিয়ে বিমানের ইঞ্জিন তৈরির কাজটি খুব পরিশ্রমের। ভবিষ্যতে থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে সহজেই এসব তৈরি সম্ভব হতে পারে। স্পেনের এক কোম্পানি এমন থ্রিডি প্রিন্টার বানিয়েছে, যেটি দিয়ে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ তৈরি সম্ভব হচ্ছে।
এই পদ্ধতিতে ধাতুর অপচয় হয় না, কারণ, লেজার টেকনোলজির সাহায্যে প্রতিনিয়ত ধাতুর নতুন স্তর যোগ করে যন্ত্রাংশ তৈরি হয়। এমন প্রিন্টারের পরিকল্পনা করেছিলেন লুকাস হোপে। মেলটিও কোম্পানির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আমরা স্বয়ংক্রিয় একটি মেশিন বানাতে চেয়েছি যেটা খুব সহজে ব্যবহার করা যাবে। সে কারণে আমরা নিজেদের ইন্টারফেস বানিয়েছি। আপনাকে এখানে যা করতে হয়, শুধু উপকরণগুলো দিতে হয়। আপনি যেখানে চান সেখানে উপকরণ দেওয়ার পর যা করতে হবে, সেটা হচ্ছে দরজাটা বন্ধ করা। এরপর প্রিন্টিং শুরু হবে।
এখন পর্যন্ত ৩০০-র বেশি প্রিন্টার বিক্রি করেছে মেলটিও কোম্পানি।একেকটির দাম প্রায় দুই লাখ ইউরো। জটিল সব কাজ করার মতো দক্ষ লোক অনেক কোম্পানির থাকে না। হোপে বলেন, ‘‘আমাদের অনেক ক্রেতা বিশেষায়িত কাজ করার মতো লোকবল খুঁজে পাচ্ছে না। কারণ, এমন লোক আর নেই।” আজকাল ক্রেতারা নিজস্ব যন্ত্রাংশ তৈরি করতে চায়। এক্ষেত্রে সমাধান হলো প্রিন্টিং।
তবে এতে সময় লাগে। একটি যন্ত্রাংশ তৈরি করতে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা লাগে। অবশ্য এই প্রিন্টার দিয়ে এখন পর্যন্ত সব ধাতু ও আকারের যন্ত্রাংশ তৈরি সম্ভব নয়। স্পেনের আন্দালুসিয়ার সাবেক খনি শহর লিনারেসে মেলটিও কোম্পানিটি অবস্থিত । এমন জায়গা বেছে নেওয়ার কারণ, সেখানে আগে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা একটি কোম্পানি ছিল। সে কারণে মার্কেটিংয়ের মতো বিষয়ে তাদের সুবিধা হয়েছে। কোম্পানিটি বলছে, ঐ এলাকায় বেকারত্বের হার প্রায় ৩০ শতাংশ হওয়ায় নতুন কর্মী খুঁজে পাওয়া সহজ।
হোপে বলেন, ‘‘শুরুতে আমরা খুব ছোট টিম ছিলাম। এখন আমরা ১০০ জনের দল। এছাড়া প্রতি সপ্তাহেই নতুন কর্মী যোগ দিচ্ছেন।” প্রিন্টার দিয়ে যা তৈরি করা যায় তা হচ্ছে: জাহাজের প্রোপেলার, কেমিকেল ও খাদ্য শিল্পে ব্যবহৃত ইনজেকশন নজল, গ্যাস ও তরলের পাইপ ইত্যাদি।
থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে প্রিন্টিংয়ের পাশাপাশি মসৃণ করার কাজও করা যায়। যন্ত্রাংশটি দেখতে উজ্জ্বল ও কাচের মতো সমতল না হওয়া পর্যন্ত কাজ করা যায়।
কোম্পানিটি এখন লাভে আছে, কিন্তু লাভের অংশ বিনিয়োগকারীদের না দিয়ে পুনরায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে৷ হোপে বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, সবার কাছে উদাহরণ হয়ে ওঠা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চাই, এভাবেও যন্ত্রাংশ তৈরি সম্ভব। সেজন্য আমাদের আরও বড় হতে হবে।” (সূত্রঃ ডয়চে ভেলে)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন