ওপেক প্লাস অক্টোবর ও নভেম্বরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে বিশ্বব্যাপী দুর্বল অর্থনীতি ও শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীনে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কমে যাওয়ায় সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। এ কারণে উত্তোলন বৃদ্ধির সময়সীমা দুই মাস পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাতসংশ্লিষ্ট তিন সূত্র বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গত বৃহস্পতিবার গত বছরের জুনের পর সর্বনিম্নে নেমে আসে। তবে উত্তোলন বৃদ্ধির সময়সীমা পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তের পর পণ্যটির দাম আবার কিছুটা বেড়েছে। ব্রেন্টের দাম গতকাল ৩৭ সেন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৩ ডলার শূন্য ৬ সেন্ট। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৩৩ সেন্ট বা দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৬৯ ডলার ৪৮ সেন্টে।
ওপেক প্লাস বর্তমানে দৈনিক গড়ে ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন কমাচ্ছে, যা বৈশ্বিক চাহিদার প্রায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে পণ্যটির দাম স্থিতিশীল রাখতে অক্টোবর ও নভেম্বরে দৈনিক ১ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি। এর আগে ওপেক প্লাস উত্তোলন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অতিরিক্ত সরবরাহের সম্ভাবনা ও লিবিয়া থেকে রফতানি বন্ধের দ্বন্দ্বের সমাপ্তির সম্ভাবনা এবং চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় সংগঠনটিতে উদ্বেগ বেড়েছে।
ইরাক ২৭ আগস্ট পর্যন্ত রফতানি কমিয়েছে দৈনিক ৩৩ লাখ ব্যারেল : ইরাক গত ২৭ আগস্ট পর্যন্ত জ্বালানি তেল রফতানি দৈনিক ৩৩ লাখ ব্যারেল কমিয়েছে। ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মাসগুলোয় এ হ্রাস অব্যাহত রাখবে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ইরাকের অয়েল মিনিস্ট্রি এ তথ্য জানায়।
অয়েল মিনিস্ট্রির বিবৃতি অনুযায়ী, এ হ্রাসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ব্যবহার কমানোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইরাক জুলাইয়ে গড়ে দৈনিক ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করেছে, জুনে যা ছিল দৈনিক ৩৪ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল। এদিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনে ওপেকের সিদ্ধান্ত মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরাক। পাশাপাশি দেশটি অতিরিক্ত জ্বালানি তেল উত্তোলনের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে স্পষ্ট ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরাক ও কাজাখস্তান সফর শেষে সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেন ওপেকের সাধারণ সম্পাদক হাইথম আল গাইস। ওপেক প্লাসের চুক্তির বিপরীতে একটি সদস্য দেশ কোনো মাসে অতিরিক্ত উত্তোলন করলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেশটিকে পরের মাসে একই হারে উত্তোলন কমাতে হয়। চলতি বছরের শুরুতে ইরাক, কাজাখস্তান ও রাশিয়া অতিরিক্ত উত্তোলনের জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার পরিকল্পনা জুনের শেষে জমা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। (সূত্র:রয়টার্স)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন