অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়ার কিছু তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পরিষেবায় কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। তাই এশিয়ার দেশগুলোয় এলএনজির সরবরাহ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে চলতি সপ্তাহে এশিয়ার স্পট মার্কেটে বেড়েছে জ্বালানি পণ্যটির দাম। যদিও এশিয়ার বাজারে এলএনজির দাম বেশি থাকায় চীনের আমদানি এখনো নিম্নমুখী। সরবরাহ উদ্বেগে ইউরোপের বাজারে এলএনজির দাম বাড়ছে।
শিল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় অক্টোবরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় দাম ছিল চলতি সপ্তাহে ১৪ ডলার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩ ডলার ৮০ সেন্ট।
কমোডিটি প্রাইসিং এজেন্সি আরগাসের এলএনজি প্রাইসিং বিভাগের প্রধান স্যামুয়েল গুড বলেন, ‘এলএনজি সরবরাহের উদ্বেগ এশিয়া ও ইউরোপে পণ্যটির দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। অস্ট্রেলিয়ার ইচথিসের একটি ট্রেন অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে। অন্যদিকে মালয়েশিয়ার বিনতুলুতে উৎপাদন সীমাবদ্ধতার কারণে আসন্ন সপ্তাহগুলোয় সরবরাহ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’
তিরি আরো বলেন, ‘পণ্যটির বাজার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিপোর্ট এলএনজির দিকে নিবিড় নজর রাখছে।’
রিস্টাড এনার্জির সিনিয়র অ্যানালিস্ট মাসানোরি ওডাকা বলেন, ‘গত সপ্তাহে চলমান তাপ প্রবাহের কারণে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে সরবরাহের জন্য জাপান ও ভারতে এলএনজির চাহিদা কিছুটা বেড়েছে।’
জাপানের অধিকাংশ অঞ্চলে গতকাল থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাভাবিক গড়ের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করার ৭০-৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নরওয়ের কিছু পরিষেবায় এলএনজির উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বেশকিছু দেশে পণ্যটির সরবরাহ কমেছে। এ কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইউরোপের বাজারেও এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া ইউক্রেন দিয়ে রাশিয়া থেকে এলএনজির সরবরাহেও ঝুঁকি রয়ে গেছে।
রাবোব্যাংক লন্ডনের এনার্জি স্ট্র্যাটিজিস্ট ফ্লোরেন্স শ্মিট বলেন, ‘আসন্ন সপ্তাহগুলোয়ও ইউরোপে এলএনজির বাজার দরে অস্থিরতা বজায় থাকতে পারে। এছাড়া চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে এটি কমার খুব বেশি সম্ভাবনা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘পাইপলাইন দিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে এলএনজির চাহিদা বেড়েছে।’
ইউরোপে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস অক্টোবরে সরবরাহ চুক্তিতে নর্থ-ওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার বাজার আদর্শের দাম স্থির করেছে প্রতি এমএমবিটিইউতে ১২ ডলার ৪৩৮ সেন্ট। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভার্চুয়াল ট্রেডিং পয়েন্ট টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউতে দশমিক ২৬ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।
আরগাস প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১২ ডলার ৪৭৫ সেন্ট। অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিস সেপ্টেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১২ ডলার ৩৭৯ সেন্ট।
এদিকে স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানিয়েছেন, শুক্রবার আটলান্টিক সাগরপথে এলএনজি পরিবহনে ব্যয় কমে দৈনিক ৬০ হাজার ৫০০ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে পরিবহন ব্যয় কমে দৈনিক ৭৭ হাজার ৫০০ ডলারে নেমে এসেছে।
Source : Business Recorder
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন