ফুয়েল সেল গাড়ি উৎপাদনে টয়োটা ও বিএমডব্লিউর জোট – The Finance BD
 ঢাকা     সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ অপরাহ্ন

ফুয়েল সেল গাড়ি উৎপাদনে টয়োটা ও বিএমডব্লিউর জোট

  • ২৯/০৮/২০২৪

বিশ্বব্যাপী বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির (ইভি) চাহিদা কমছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘ফুয়েল সেল’ গাড়ি পরবর্তী প্রজন্মের সর্বাপেক্ষা পরিবেশবান্ধব যানবাহন হিসেবে সামনে এসেছে। সম্ভাবনাময় এ বাজার ধরতে সমঝোতা জোরদার করতে যাচ্ছে টয়োটা মোটর ও বিএমডব্লিউ। এর আওতায় বিএমডব্লিউ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ফুয়েল সেল গাড়ির একটি মডেলের উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্য নিয়েছে। জাপানি ও জার্মান কোম্পানি দুটি আগামী সপ্তাহে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে।
ফুয়েল সেল গাড়িগুলো হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন বিদ্যুতে চলে। শক্তি উৎপাদনের সময় কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিবর্তে যানবাহনগুলো পানি নির্গত করে। ফলে অনেকেই এ গাড়িগুলোকে সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব যানবাহন বলে অভিহিত করেন। এছাড়া জ্বালানি পূর্ণ করতেও ইভির তুলনায় এগুলো কম সময় নেয়।
ফুয়েল সেল যানবাহন উৎপাদনে টয়োটা ও বিএমডব্লিউ ২০১২ সালের জুন থেকে অংশীদারত্বে কাজ করে আসছে। তবে এ সময় সীমিত সংখ্যক যন্ত্রাংশ সরবরাহ করাই ছিল টয়োটার ভূমিকা। অংশীদারত্ব জোরদারের ফলে টয়োটা বিএমডব্লিউকে আরো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ সরবরাহ করবে। এর মধ্যে আছে হাইড্রোজেন ট্যাংক ও ফুয়েল সেল সিস্টেম। এরপর বিএমডব্লিউ ড্রাইভ সিস্টেমের মতো নিজস্ব ইভি প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো গাড়িটি তৈরি করবে।
বিএমডব্লিউ ‘আইএক্স৫ হাইড্রোজেন’ নামে একটি কনসেপ্ট ফুয়েল সেল গাড়ির মডেল তৈরি করেছে। এতে দুটি হাইড্রোজেন ট্যাংক আছে। একবার জ্বালানি পূর্ণ করলে একটানা ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি চলতে পারবে গাড়িটি। জ্বালানি পূর্ণ করতেও ৩-৪ মিনিটের বেশি সময় লাগে না। বিএমডব্লিউর এসইউভিএক্সের ওপর ভিত্তি করে মডেলটি তৈরি করা হয়েছে।
বিএমডব্লিউ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আইএক্স৫ হাইড্রোজেনের ব্যাপক উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্য নিয়েছে। টয়োটার ফুয়েল সেল সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে গাড়িটির উন্নয়ন ও উৎপাদন ব্যয় কমানো সম্ভব হবে।
ফুয়েল সেল গাড়ির উৎপাদনে টয়োটার অভিজ্ঞতা বেশ পুরনো। কোম্পানিটি ২০১৪ সালে নিজেদের ফুয়েল সেল গাড়ি ‘মিরাই’ বাজারে এনেছিল। গাড়িটি সে সময় প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় বেশ এগিয়ে ছিল। তবে জাপানে মিরাইয়ের দাম ৭০ লাখ ইয়েন (৪৮ হাজার ডলার) ছাড়িয়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। টয়োটা ও বিএমডব্লিউ প্রধান যন্ত্রাংশগুলো ভাগাভাগি করে উৎপাদনের মাধ্যমে গাড়ির দাম কমানোর চেষ্টা করছে। এতে সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করছে কোম্পানি দুটি।
ইভির চাহিদা কমায় বর্তমানে ফুয়েল সেল গাড়ির বাজার ভালো পরিস্থিতি পার করছে। এর আগে ২০২১ সালে ফুয়েল সেল গাড়ি উৎপাদন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোন্ডা মোটর। সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে গত মাসে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ফুয়েল সেল গাড়ি চালু করেছে কোম্পানিটি।
বিএমডব্লিউ ২০৩০-এর দশকে একাধিক মডেল তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা আইএক্স৫ হাইড্রোজেন বাজারে আসার পর উন্মোচন করা হবে।
নতুন অংশীদারত্বের মাধ্যমে ইউরোপে হাইড্রোজেন জ্বালানি সরবরাহের অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউরোপিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ইউরোপীয় ইউনিয়নে মোট ৬ লাখ ৩২ হাজার ইভি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। একই সময়ে গোটা ইউরোপে হাইড্রোজেন ফিলিং স্টেশনের সংখ্যা মাত্র ২৭০টিতে রয়ে গেছে। (খবর: নিক্কেই এশিয়া)

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us