MENU
 শীর্ষ প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর নগদ অর্থ প্রবাহ পৌঁছবে ৫২০০ কোটি ডলারে – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

শীর্ষ প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর নগদ অর্থ প্রবাহ পৌঁছবে ৫২০০ কোটি ডলারে

  • ২৮/০৮/২০২৪

ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিভিন্ন দেশের মানুষ ও অর্থনীতি। একই সময়ে স্থল ও মহাকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কোম্পানিগুলো ফুলেফেঁপে উঠছে, যা আগামী কয়েক বছর অব্যাহত থাকবে বলে এফটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে। পুঁজিবাজারসংক্রান্ত ভার্টিক্যাল রিসার্চ পার্টনার্সের বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে সেখানে বলা হচ্ছে, ২০২৬ সাল নাগাদ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১৫টি মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা কোম্পানির অবাধ নগদ প্রবাহ ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে, যা ২০২১ সালে তাদের সম্মিলিত নগদ প্রবাহের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
পরিচালন ও মূলধন ব্যয়ের পর কোনো কোম্পানির কাছে যে নগদ অর্থ থাকে তা-ই অবাধ নগদ প্রবাহ। সাধারণত লভ্যাংশ বিতরণ, শেয়ার বাইব্যাক বা পুনঃক্রয় ও নতুন বিনিয়োগে এ অর্থ ব্যবহার হয়।
এ নগদ প্রবাহের অর্ধেকই যুক্ত হচ্ছে পাঁচ মার্কিন কোম্পানির অ্যাকাউন্টে। ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ তাদের হাতে থাকবে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, যা ২০২১ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। তবে এ হিসাবের মধ্যে নেই বোয়িং। এছাড়া ইউরোপে গোলাবারুদ ও ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে উপকৃত হবে বিএই সিস্টেমস, রাইনমেটাল ও সাব। তাদের সম্মিলিত নগদ প্রবাহ ৪০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে।
যুদ্ধকেন্দ্রিক এ ব্যবসায় বড় ধরনের প্রভাব রেখেছে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ এবং মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় উত্তেজনা বৃদ্ধি। ইউক্রেন, তাইওয়ান ও ইসরায়েলের জন্য সাম্প্রতিক মার্কিন সহায়তা বিলে নাম রয়েছে দেশটির পাঁচ বৃহত্তম প্রতিরক্ষা কোম্পানি লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স, নর্থরপ গ্রুম্যান, বোয়িং ও জেনারেল ডায়নামিকসের। এ কোম্পানিগুলোর জন্য বরাদ্দ প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এছাড়া ইউক্রেনে ৭৬০ কোটি পাউন্ড খরচ করছে যুক্তরাজ্য।
সামরিক খাতে সরকারি ব্যয় এরই মধ্যে রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। সাধারণত নতুন চুক্তির ফল বুঝতে কয়েক বছর সময় লাগে। কারণ অস্ত্র সরবরাহ করার পরই কোম্পানিগুলো নগদ অর্থ পায়। তা সত্ত্বেও এখনো তাদের হাতে বড় অংকের নগদ অর্থ রয়েছে। কোম্পানিগুলো এ অর্থ কীভাবে ব্যয় করবে তা নিয়ে বিতর্কও চলছে। ভার্টিক্যাল রিসার্চ পার্টনার্সের বিশ্লেষক রবার্ট স্টলার্ড বলেন, ‘প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো ব্যালান্স শিটে বড় অংকের নগদ অর্থ রাখতে পছন্দ করে না। তাই বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন যদি অধিগ্রহণের মতো চুক্তিতে যেতে না চায়, তবে এ অর্থ দিয়ে কী করবে? একটি উপায় হলো শেয়ার পুনঃক্রয় ও লভ্যাংশ বিতরণ।’
অবশ্য ক্রয়াদেশের বাড়বাড়ন্তের আগেই কোম্পানিগুলো শেয়ার পুনঃক্রয় শুরু করেছে। ব্যাংক অব আমেরিকার তথ্যানুসারে, পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর মধ্যে শেয়ার পুনঃক্রয়ের প্রবণতা সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। গত বছর লকহিড মার্টিন ও আরটিএক্স ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের শেয়ার কিনেছে। বিএই সিস্টেমস এ গ্রীষ্মে তিন বছর মেয়াদি ১৫০ কোটি ডলারের পুনঃক্রয় শেষ করেছে এবং সামনে একই অংকের শেয়ার কিনে নেবে।
করদাতাদের অর্থে বড় আকারের পুনঃক্রয় নিয়ে কয়েকজন মার্কিন আইনপ্রণেতা সমালোচনাও করেছেন। প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলো নতুন ব্যবসা ও উৎপাদনে যথেষ্ট বিনিয়োগ করছে কিনা তাদের প্রশ্ন। বিপরীতে নির্বাহীরা জানান, শেয়ার পুনঃক্রয়ের পরও মূলধন ব্যয় বাড়ানোর দিকে মনোযোগ তাদের।
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, অতিরিক্ত অর্থ আরো চুক্তি বা অধিগ্রহণে খরচ করবে কোম্পানিগুলো। সঙ্গে সতর্ক করে বলছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কারণে বড় ক্রয়গুলো সীমিত হতে পারে। কারণ বাজারে প্রতিযোগিতা কমছে কিনা সে বিষয়ে কড়া নজরদারি রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্লেষক নিক কানিংহাম বলেন, ‘অনিবার্যভাবে এ চক্রের পরবর্তী পর্যায় হলো অধিগ্রহণ ও একীভূতকরণ। প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগ ও আয়ের চক্র বেশ দীর্ঘ। এ পরিপ্রেক্ষিতে নতুন সক্ষমতা তৈরি ও অর্থ প্রবাহে কিছুটা সময় লাগে। তবে বাজারে বড় ধরনের বৃদ্ধি এ শিল্পের কার্যকলাপ আরো বাড়াবে।’
চলতি মাসে মিশিগানভিত্তিক সামরিক যানবাহন যন্ত্রাংশ নির্মাতা লোক পারফরম্যান্সের সঙ্গে ৯৫ কোটি ডলারের চুক্তি ঘোষণা করেছে রাইনমেটাল। এতে যুদ্ধযান ও ট্যাকটিক্যাল ট্রাকের জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে ৬ হাজার কোটি ডলারে চুক্তিতে পৌঁছানো সহজ হবে বলে আশা করছে জার্মান প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় আগামী বছরগুলোয় শক্তিশালী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যুদ্ধ শেষ হলে বিশেষ করে ইউক্রেনে, তখন ক্রয়াদেশ কমতে থাকবে। বিনিয়োগবিষয়ক সংস্থা ক্যাপিটাল আলফা পার্টনাসের বিশ্লেষক বায়রন ক্যালানের মতে, প্রতিরক্ষা শিল্পের চাহিদা চক্র সাধারণত ১০ বছর স্থায়িত্ব পায়। তবে নানা কারণে পরিবর্তন আসতেও পারে। এর মধ্যে রয়েছ রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ব্যবস্থার মূল্যায়ন ও প্রতিরক্ষা চাহিদাসংক্রান্ত পরিবর্তন।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us