বিশ্বে ধাতব পণ্যের শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীন। দেশটিতে বেশ কয়েক দিন ধরেই নির্মাণ খাতে মন্দা ভাব বজায় রয়েছে। ফলে কমছে ধাতব পণ্যের চাহিদা। এতে বিশ্বব্যাপী ইস্পাত তৈরির প্রধান উপাদান আকরিক লোহাসহ অন্যান্য ধাতুর দাম নিম্নমুখী হয়ে উঠেছে। এ নিম্নমুখিতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে বাজার ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিএমআই। এ অবস্থায় চলতি বছরের জন্য আকরিক লোহার মূল্যের পূর্বাভাস সংশোধন করে ২২ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর ধাতুটির গড় মূল্য দাঁড়াতে পারে টনপ্রতি ১১০ ডলার। এর আগে দেয়া পূর্বাভাসে চলতি বছর আকরিক লোহার দাম টনপ্রতি গড়ে ১২০ ডলার হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। বিএমআই জানায়, চীনের কিংদাও বন্দরে বর্তমানে টনপ্রতি আকরিক লোহার দাম ১০০ ডলারের নিচে। এমনকি ১৬ আগস্ট পর্যন্ত টনপ্রতি ৮৮ ডলারের নিচে বেচাকেনা হয়েছে, যা ২০২২ সালের নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন। এ বন্দরে চলতি বছর ধাতুটির গড় মূল্য হতে পারে টনপ্রতি ১০৯ ডলার।
বাজার বিশ্লেষক সংস্থাটি জানায়, প্রধান আমদানিকারক দেশ চীনের নির্মাণ খাতে এখনো মন্দা ভাব বজায় আছে। এ অবস্থান এখনই পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই পণ্যটির দাম আরো কমতে পারে। সংস্থাটির চলতি বছরের জন্য টনপ্রতি আকরিক লোহার দাম ১১০ ডলার মূল্যের পূর্বাভাস থেকে ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের শেষের দিকে বর্তমান স্তর থেকে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। যদিও তা নির্ভর করবে চীনের নির্মাণ খাতের তথ্যের ওপর।
ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের বরাত দিয়ে বিএমআই আরো জানায়, জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত চীনের অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। অভ্যন্তরীণভাবে দেশটির ইস্পাত শিল্প ক্রমাগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। দেশটিতে ইস্পাতের পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেস্ক (পিএমআই) জুলাইয়ে ৪২ দশমিক ৫-এ নেমে এসেছে, জুনে যা ছিল ৪৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট।
এদিকে চীনে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে আকরিক লোহা আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। বিএমআই জানায়, চাহিদা কমে যাওয়ায় চীনের বন্দরগুলোয় আকরিক লোহার মজুদ বেড়েছে। ১৬ আগস্ট পর্যন্ত তা ৩১ শতাংশ বেড়ে ১৪ কোটি ৯৬ লাখ টনে পৌঁছেছে। ফলে আগামী মাসগুলোয় এর দামে প্রভাব পড়বে।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, নির্মাণ খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান আমদানিকারক দেশ চীনে চাহিদা কম থাকবে। এদিকে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ভারত, তুরস্ক ও ইরানে উৎপাদন যথাক্রমে ৭ দশমিক ৪, ১৬ দশমিক ৯ ও ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৬ ও ২ দশমিক ৪ শতাংশ। রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ইস্পাত উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৩ ও ৬ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। (খবরঃ মাইনিং উইকলি)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন