আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান

  • ২৫/০৮/২০২৪

মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়তে থাকায় ফ্লাইট চলাচলের জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। তাই আফগানিস্তান দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স এতদিন আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে ফ্লাইট চলাচল এড়িয়ে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়তে থাকায় এবার অপেক্ষাকৃত নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে সেই আফগানিস্তানই। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স-সহ ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং জার্মানির লুফথানসাও এখন আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে ফ্লাইট চলাচলের জন্য আফগানিস্তান প্রধান রুট হলেও বিশ্বের দেশগুলোর এয়ারলাইন্স মূলত এই পথে যাতায়াত বন্ধ করেছিল ৩ বছর আগে। ওই সময় তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা দখলের পর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওই সেবা এখনও চালু হয়নি। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স ফ্লাইট চলাচলের জন্য ইরান এবং ইসরায়েলের আকাশ সীমাকে আফগানিস্তানের আকাশসীমার চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর অনেক পশ্চিমা দেশই রুশ আকাশসীমা দিয়ে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে বিকল্প হিসাবে ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আকাশসীমাকে রুট হিসাবে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সংগঠনের ফ্লাইটরাডার২৪-এর এক মুখপাত্র আয়ান পেচেনিক বলেছেন, সংঘর্ষের আবর্তে কোন দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করা হবে সে হিসাব-নিকাশ বদলে গেছে। এয়ারলাইন্স গুলো চলাচলের পথে ঝুঁকি যতটা সম্ভব কম রাখতে চাইছে। ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে সম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়াটা তুলনামূলক নিরাপদ বিকল্প পথ।
এয়ারলাইন্স গুলো দিন দিন আফগানিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে উড়োজাহাজ চলাচল বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ ওই পথে নেই কোনও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল। তাছাড়া, আফগানিস্তানের আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও উড়োজাহাজের ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য অস্ত্র হামলারও শিকার হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এই ঝুঁকি থাকারও পর আফগানিস্তানের আকাশ দিয়ে এয়ারলাইন্স গুলোর ফ্লাইট চলাচল শুরু হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে। ওই সময় ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চলছিল। ওই সময়কার ফ্লাইট ট্র্যাকিং তথ্য থেকে দেখা যায়, লুফথানসা, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও অন্য আরও এয়ারলাইন্স দিনে কিছু কিছু করে ফ্লাইট আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে পরিচালনা করতে শুরু করেছে। ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা গ্রহণ করে তালেবান। সেই বছরই আফগানিস্তানের সঙ্গে বিমান চলাচল শুরু করার জন্য এক চিঠিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানায় তালেবান। ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) কাছে পাঠানো চিঠিতে কাবুলে ফ্লাইট পরিচালনার আহ্বান জানায়। ২১ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দর থেকে ভারতগামী শেষ বিমান ছেড়েছিল। দুই দশক পরে ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসা তালেবান সরকারকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি ভারত।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের মন্ত্রী হামিদুল্লা আখুন্দজাদা বলেছেন, মার্কিন সেনা ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে কাবুল বিমানবন্দরকে ক্ষতিগ্রস্ত ও অকেজো করে দিয়েছে। কিন্তু পরে কাতারের সহায়তায় বিমানবন্দরটি ফের কর্মক্ষম হয়ে উঠেছে।আখুন্দজাদা দুই দেশের মধ্যে যাতে ফের বিমান চলাচল আগের মতোই চালু হয় সেই উদ্দেশ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
ভারতের বিমানমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেছিলেন, আমরা এখন আফগানিস্তানের আকাশপথ এড়াতে দীর্ঘ রুট ধরে চলাচল করছি। অন্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সও সেটাই করছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবার পুরনো পথই ব্যবহার করা হবে।

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us