পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো ক্রীড়া আসর অলিম্পিকস। প্রতি বছর অলিম্পিকস গেমসের আয়োজন প্রাচীন গ্রিক ঐতিহ্যের পরম্পরাকে বহন করে। আধুনিক সময়ে এসে নানা অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছে দুনিয়ার ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় এ আসরে। তেমনই একটি অনুষঙ্গ অলিম্পিকসের পিন। আয়োজনকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর অলিম্পিকস কমিটি, স্পন্সর, সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ও অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল স্মারক পিন তৈরি করে। ১৮৯৬ সালে পিয়েরে ডি কুবার্টিন নামে এক ব্যক্তির হাত ধরে অলিম্পিকসে এর প্রচলন শুরু হয়। সে সময় অ্যাথলেট, কোচ ও সংবাদকর্মীদের শনাক্তের জন্য কার্ডবোর্ডের পিন সরবরাহ করা হতো।
বর্তমানে এনামেলের তৈরি পিন বহুল ব্যবহৃত। পিনের নকশায় এসেছে নান্দনিকতা। ফলে পিন বেচাকেনা, সংগ্রহ একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪ সালের অলিম্পিকস আসরে পিন ব্যবসায়ীরা ভিড় জমিয়েছিলেন ঐতিহ্যের শহর প্যারিসে। পিনের সংগ্রহ বাড়ানো কিংবা সেগুলো ভালো দামে বেচাবিক্রিই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কোটপিন আদলের এ পিনগুলোয় মূলত অলিম্পিকসের বিভিন্ন উপাদান ধাতবের ওপরে ফুটিয়ে তোলা হয়। এর মধ্যে অলিম্পিকের লোগো থেকে শুরু করে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পরিচয়সূচক চিহ্ন থাকতে পারে। স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ও সংবাদমাধ্যমকর্মীরাও নিজেদের প্রতিষ্ঠানের স্মারক পিন পরিধান করেন।সংগ্রাহক ও বিক্রেতারা রঙ-বেরঙের পোশাক পরে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। আগ্রহীরা তাদের সংগ্রহ দেখতে ও কিনতে পারেন। প্যারিসে এ বছর শখের বশে পিন সংগ্রহ করতে এসেছিলেন ক্রেইগ রবিনসস। তিনি জানান, মানুষ এখানে পিন সংগ্রহের জন্য মরিয়া। রাস্তায় বা কফিশপেও সংগ্রাহকরা দর্শক, সংবাদকর্মী কিংবা অন্যদের থেকে পিন সংগ্রহের চেষ্টা করেন। চাহিদার কারণে সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটস প্রেসের পিন ৩০-৫০ ডলারে বিক্রি হয়েছে।’ আমেরিকান দর্শক ও সংগ্রাহক পল ইয়ানস জানান, ‘পিনগুলো মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে। তাদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে। অচেনা সংগ্রাহক বা বিক্রেতারা অনেক সময় আপনাকে এমন কিছু বলবে, যা আপনি জানেন না।’ বলা বাহুল্য, প্রতিটি অলিম্পিকের পিনের পেছনে একটি গল্প লুকিয়ে থাকে। পিন লেনদেনের মাধ্যমে মানুষ গল্পকার হয়ে ওঠে, তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা বিনিময় করে। (খবর ও ছবি: এপি)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন