বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া রোগ মাঙ্কিপক্সের (এমপক্স) প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পুঁজিবাজারেও। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, স্বাস্থ্যসেবা ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে গেছে। সংক্রামক এমপক্স নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা জারির পর পুঁজিবাজারে নতুন এ প্রবণতা দেখা গেল।
এমপক্সের টিকার চাহিদা বাড়তে পারে—মূলত এমন সম্ভাবনাকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য খাতের বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এ তালিকায় সুইডেনভিত্তিক টিকা উৎপাদনকারী বেভারিয়ান নরডিচও রয়েছে। এ কোম্পানির উদ্ভাবিত টিকা জিনিয়স এরই মধ্যে বাজারজাতের অনুমোদন পেয়েছে। ১৬ আগস্ট সকালে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে যায় ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
এখন পর্যন্ত এমপক্সের জন্য দুটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। এর মধ্যে একটি জিনিয়স। ডব্লিউএইচওর স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্টস অন ইমিউনাইজেশনও (এসএজিই) এ টিকার অনুমোদন দিয়েছে।
এমপক্স নিয়ে ঘোষিত জরুরি ব্যবস্থা মোকাবেলায় তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছে বেভারিয়ান নরডিচ। কোম্পানিটি বলছে, তাদের কাছে প্রায় তিন লাখ ডোজ টিকা সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া আগামী বছরের মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য প্রায় এক কোটি ডোজ টিকা প্রস্তুত করতে পারবে।
ভাইরাস শনাক্তের কিট উৎপাদনকারী চীনা প্রতিষ্ঠান ‘সাংহাই জেডজি বায়ে-টেক’ কোম্পানির শেয়ারদরও ১৬ আগস্ট ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে যায়। অন্যদিকে চিকিৎসা-সরঞ্জাম সরবরাহকারী জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘প্রিসিশন সিস্টেম সায়েন্সের’ শেয়ারদর বাড়ে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এমপক্সের টিকা উৎপাদন করে না স্বাস্থ্যসেবা খাতের এমন অনেক কোম্পানির শেয়ারদরও বেড়েছে। ১৫ আগস্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার শেয়ারদর বেড়ে যায় ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। নভো নরিডস্কের শেয়ারদর বাড়ে ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অবশ্য কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে এশিয়ার কিছু দেশে কভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শেয়ারদর বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের।
এদিকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অধ্যাপক দিমি ওগোইনার বলেছেন, যৌন সংক্রামকের একটি ধরনসহ ছড়িয়ে পড়া এমপক্স ভাইরাস শুধু আফ্রিকার জন্যই নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই তা জরুরি পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আফ্রিকায় শনাক্ত হলেও সেখানে এমপক্সকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ফলে ২০২২ সালে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে এখনই এমপক্সকে প্রতিরোধ করতে হবে।’
ডব্লিউএইচওর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক ড. মাৎশিদিসো মোয়েতি বলেছেন, এমপক্সের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশ ও গোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সুইডেনে ১৯৫৮ সালে বানরের শরীরে সর্বপ্রথম এমপক্সের ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়। আর মানব শরীরে প্রথম সংক্রমণের খবর আসে ১৯৭০ সালে। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোয় নয় মাসের এক শিশুর শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০২২ ও ২০২৩ সালে রোগটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। (খবরঃ ইউরো নিউজ)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন